দেশে ভোজ্যতেলের প্রায় ৯০ভাগই আমদানি নির্ভর। এজন্য প্রতি বছর খরচ করতে হয় প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। সরকার এ আমদানি ব্যয় কমাতে চায়। পরিকল্পনা মাফিক গত দুই বছরে ১০ ভাগ কমেছে তেল আমদানি। সরিষার চাষ বাড়িয়ে আগামী বছরের মধ্যেই দেশের ভোজ্য তেলের ৪০ ভাগ স্বয়ং সম্পন্নতা অর্জনের কথা বলছে কৃষি বিভাগ। আর কৃষকের দাবি ন্যায্য দাম পেলে সরিষার চাষ বাড়বে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি, নন্দীগ্রাম, কাহালু, আদমদিঘির সরিষাফুলের মাঠগুলি এখন অনেকটা বিবর্ণ। সরিষা দানা পেকে মাঠ ধূসর বর্ণ ধারণ করেছে। কাটা মাড়াই প্রায় শেষ। বাজারে এখন সরিষা আনছেন কৃষক। তবে গত বছরের তুলনায় এবার সরিষার দাম অনেকটাই কম। দাম কম হলেও ভোজ্য তেলে সাংসারিক খরচ সাশ্রয় হয়েছে। অন্যদিকে উদ্বৃত্ত সরিষা বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক।
আবাদ বেশি হওয়ায় হাট বাজারে সরবরাহ বেড়েছে সরিষার। দাম কমে গেছে অনেকটা। গত বছরের তুলনায় প্রতি মন সরিষার দাম কমেছে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা। সরিষার দাম কমার সাথে হাট বাজারে এর তেলের দামও কমে গেছে। ১৪০ টাকা সরিষার তেল বিক্রি হলেও সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। কয়েক বছর আগেও সয়াবিনের চেয়ে সরিষার তেলের দাম বেশি ছিল।
তিন বছরে দেশের ভোজ্যতেলের ৪০ ভাগ স্বয়ং সম্পন্নতা অর্জনের পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে সরকার। আগামী বছরই লক্ষ্যপূরণ সম্ভব হবে বলে প্রত্যাশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। অনাবাদি পতিত জমিতে সরিষার চাষ বাড়িয়ে, উন্নত জাত সৃষ্টির মাধ্যমে ফলন বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে কৃষি বিভাগের। সেই সাথে সরিষা চাষে কৃষকদের সহযোগিতা বাড়ানো হচ্ছে।
বগুড়া অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক সরকার শফি উদ্দিন আহমদ বলেন, 'আমাদের স্বল্পকালীন আমন ধানের জাত ছিল সেগুলোতে সরিষা আবাদ করতে পেরেছি। এছাড়া আমাদের বিভিন্ন ধরনের পতিত জমি যেমন পুকুরের পার, রাস্তার ধার এইসব জায়গায় সরিষা আবাদ করেছি।'
দেশে এবার ১০ লাখ ৯৪ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ২ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর বেশি। এবার সরিষা উৎপাদন হয়েছে ১৪ লাখ ৩০ হাজার টন। যার বর্তমান বাজারমূল্য ১০৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে দুই বছরে ভোজ্যতেল আমদানি ব্যয় ২০ হাজার কোটি টাকা কমেছে।