ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পিঁয়াজবীজের বাম্পার ফলন আশা করছে চাষিরা। মাঠে মাঠে পিঁয়াজের ফুল ফুটে রয়েছে। এলাকায় পিঁয়াজের বীজ ‘কালো সোনা’ নামে পরিচিত। উৎপাদন ও চাহিদা ভেদে ১ মণ পিঁয়াজবীজের দাম ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পিঁয়াজবীজ উৎপাদনে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার খ্যাতি রয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কৃষক পিঁয়াজবীজ কেনার জন্য ভাঙ্গায় আসে। হরেকরকমের পিঁয়াজ চাষ হয় এ উপজেলায়। এর মধ্যে দানা পিঁয়াজ, মুড়িকাটা পিঁয়াজ ও হালি পিঁয়াজ অন্যতম।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ভাঙ্গায় ৪৩০ হেক্টর জমিতে পিঁয়াজবীজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। আবাদ হয়েছে ৪৪৫ হেক্টরে। ভালো আবহাওয়া, সুষ্ঠু পরিচর্যা, কৃষি বিভাগের পরামর্শ, উন্নত জাতের বীজ, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগের ফলে এ বছর পিঁয়াজবীজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সে হিসেবে এ বছর রেকর্ড পরিমাণ পিঁয়াজবীজ আবাদ করা হয়েছে।
এলাকার কৃষক জানায়, লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন পিঁয়াজবীজের চাষ বাড়ছে। প্রতি বিঘা জমিতে এ বীজ আবাদে খরচ পড়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে ৩ থেকে ৪ মণ পর্যন্ত বীজ উৎপন্ন হয়। গত বছর এ বীজ বিক্রি হয়েছে মণ এক থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত। তারা বলছেন, এ বছর বীজের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। ভালো দামের আশাও করছেন তারা।
ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের সাউতিকান্দা গ্রামের পিঁয়াজবীজ চাষি সোবাহান মাতুব্বর জানান, তিনি এ বছর ৫ বিঘা জমিতে পিঁয়াজবীজ আবাদ করেছেন। গত বছর সফলতা পেয়েছেন। এ বছরও চাষ করে ভালো লাভ পাওয়ার আশা করছেন।
একই এলাকার কৃষক শাহজাহান শেখ, সোবাহান শেখ, রাজু মিয়া জানান, তারা গত বছর পিঁয়াজবীজের উৎপাদন এবং দাম ভালো পাওয়ায় চলতি মৌসুমে চাষ বৃদ্ধি করেছেন।
ভাঙ্গা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আলগী ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পিঁয়াজের আবাদ হয়। পিঁয়াজবীজ বেশি উৎপাদন হয় ঘারুয়া ইউনিয়নে। এ ছাড়া হামিরদী, তুজারপুর, চান্দ্রা, মানিকদহ, চুমুরদী ও নাসিরাবাদে ব্যাপক পরিমাণে পিঁয়াজ চাষ করা হয়।
ঘারুয়া ইউনিয়নের বীজ চাষিরা জানান, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, রাজবাড়ী, পাবনাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে চাষিরা পিঁয়াজবীজ কিনতে আসেন। ভাঙ্গার পিঁয়াজবীজ গুণে-মানে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অনেক ভালো।
ভাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জীবাংশু দাস বলেন, পিঁয়াজবীজ এ এলাকায় ‘কালো সোনা’ নামে খ্যাত। ভাঙ্গা উপজেলায় এ বছর ৪৩০ হেক্টর জমিতে পিঁয়াজবীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেখানে ৪৪৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।