আরেকটি বীরত্বগাথা বাংলাদেশের মেয়েদের। সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে আবারও বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠত্ব। এবারও ফাইনালে নেপাল। ২–১ গোলে হারিয়ে জিতেছে বাংলাদেশ। এটা সাফে বাংলাদেশের টানা দ্বিতীয় জয়। শুরুতে মনিকা চাকমার গোল। এরপর সমতা ফেরায় নেপাল। তবে শেষ দিকে ঋতুপর্ণার দারুণ এক গোলে শিরোপা নিশ্চিত করেন সাবিনারা।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশ-নেপালের প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য সমতায়। গোলের জন্য মরিয়া দুই দলই বিরতির পর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ জমিয়ে তোলে। তারই ধারাবাহিকতায় ৫১তম মিনিটে বাংলাদেশের হয়ে লিড নেন মনিকা চাকমা। সংঘবদ্ধ আক্রমণে তহুরা-সাবিনা খাতুন বল দেওয়া-নেওয়া করছিলেন বক্সের সামনে। জটলার মধ্যে বল পান মনিকা। সেখান থেকে তিনি প্লেসিংয়ে গোল করেন।
তবে সেটি টিকেছে কেবল ৩ মিনিট। আমিশা কার্কির গোলে স্বাগতিক নেপালও সমতায় ফেরে। মধ্যমাঠ থেকে দারুণ থ্রু পাস ঠেলেন সতীর্থ আমিশাকে। সেখানে বাংলাদেশের ডিফেন্স পরাস্ত হয়। আগুয়ান গোলরক্ষক রুপ্না চাকমাকে পরাস্ত করেন আমিশা। ১-১ সমতা নিয়ে জমে উঠেছে সাফের ফাইনাল। স্বাগতিক প্রায় ২০ হাজার দর্শকের শোরগোল সেই রোমাঞ্চ আরও বাড়িয়ে তোলে।
এর মাঝে দুই দলই গোলের সুযোগ তৈরি করে। তবে আর কেউ গোলের দেখা পাচ্ছিল না, ব্যর্থতা নিয়ে ফিরছিল প্রতিপক্ষ রক্ষণভাগ থেকে। ৬৭ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে অসাধারণ এক শট নেন মারিয়া মান্দা। সেটি ঠেকিয়ে দেন নেপাল গোলরক্ষক আঞ্জিলা। ৭১ ও ৭৬ মিনিটে পরপর দুটি প্রতি-আক্রমণে ব্যর্থতা নিয়ে ফেরে নেপালি মেয়েরা।
পরে বাংলাদেশ ম্যাচে আবারও লিড নেয় ৮২ মিনিটে। বাঁ প্রান্তে থ্রো ইন পায় বাংলাদেশ। মাসুরার থ্রো থেকে বল পান ঋতুপর্ণা চাকমা। দূর থেকে কোণাকুণি এক জোড়ালো শটে ঋতুপর্ণা গোল করেন। নেপালের গোলরক্ষক বল হাতে লাগালেও সেটি পুরোপুরি লক্ষ্যচ্যুত করতে পারেননি। ফলে জালে জড়িয়ে উৎসবে মাতে বাংলাদেশ।
আজ কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। প্রায় সবই নেপালি দর্শক। নেপালি নারীদের পায়ে বল গেলেই উল্লাসে ফেটে পড়ছিলেন দর্শকরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের সেই উল্লাস থামিয়ে দেন বাংলাদেশের মেয়েরা। শেষে পুরো স্টেডিয়ামকে স্তব্দ করে জয়ের উল্লাস করে বাংলাদেশ।