সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে জামিনে মুক্তি পাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। রাজধানীসহ সারা দেশে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনারই নেপথ্যে রয়েছেন তারা। সম্প্রতি কিছু ঘটনার পর বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে কতটা যৌক্তিক ছিল এসব সন্ত্রাসীকে জামিনে মুক্তি দেয়া। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের এই টালমাটাল অবস্থায় শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নজরদারিতে রাখার কথা বললেও বাস্তবতা ভিন্ন।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার এক মাসের মধ্যে কারাগার থেকে মুক্তি পায় সাত শীর্ষ সন্ত্রাসী। কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনজন আর কাশিমপুর থেকে মুক্তি মেলে চারজনের। এদের মধ্যে সুইডেন আসলাম, কিলার আব্বাস, ফ্রিডম রাসু ও পিচ্চি হেলাল অন্যতম।
সম্প্রতি রাজধানীতে খুনখারাবি বেড়ে যাওয়ায় এর সঙ্গে কারামুক্ত সন্ত্রাসীদের যোগসূত্র দেখছে বিভিন্ন মহল। যার অন্যতম এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখমের ঘটনা। ভয়াবহ সেই ঘটনার আসামি ছিনিয়ে নিতে থানা ঘেরাও করে সন্ত্রাসীরা। গোয়েন্দাদের ধারণা, নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছেন জামিনে মুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন।
এ ঘটনার দুদিনের মাথায় মিরপুরে প্রকাশ্যে কোপানো হয় একজনকে। যার পেছনে পিচ্চি হেলালের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এমন সব ঘটনার পরও পুলিশ বলছে, নজরদারিতে আছেন শীর্ষ সন্ত্রাসীরা।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, কোনো সন্ত্রাসী আইনের আওতা থেকে রক্ষা পাবে না। পিচ্চি হেলাল বা ইমন কেউ রক্ষা পাবে না।
তবে তা মানতে নারাজ অপরাধ বিশেষজ্ঞরা। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মুক্তির বিষয়টিকে বলছেন, ‘ভুল সিদ্ধান্ত’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী যারা জামিনে মুক্ত হলেন তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বক্তব্য ছিল যে, এদের গতিপ্রকৃতি তারা নজরদারি করবে। কিন্তু সন্ত্রাসীরা জামিনে মুক্ত হয়ে যাওয়ার পর তাদের অনেকই যে ধরণের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়েছে, যেসব অপরাধ তারা করছে কিংবা অপরাধ করার জন্য পরিকল্পনা করছে, নিজেদের সংঘবদ্ধ গ্যাং তৈরি করছে তাতে স্পষ্ট বুঝা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঠিকঠাক মনিটরিং করতে পারেনি বা মনিটরিং করেনি।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশকে কঠোর হওয়ার পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের জামিনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার তাগিদ দেন, এই অপরাধ বিশ্লেষক।