কুড়িগ্রামের রাজারহাটের মৎসচাষি উমর ফারুক মন্ডল। মাত্র ৫ হাজার টাকায় জি-৩ রেনু পোনা কিনে সেই পোনা বিক্রি করে এখন লাখপতি বনে গেছেন। তিনি এখন জেলায় রেনু পোনা চাষে একজন মডেল।
সরেজমিনে জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসে মাত্র ৫ হাজার টাকায় রংপুর থেকে উন্নতজাতের ৫০০ গ্রাম রেনু সংগ্রহ করেন ফারুক মন্ডল। ৬মাস পর বেশ আকৃতি ধারণ করে এসব পোনা। আর সেই সাইজের রেনু পোনা বিক্রি করে এখন তিনি তা আয় করছেন ৩৫০ টাকা দরে। সুস্বাদু ও ৬/৭ কেজি ওজন পর্যন্ত এ রুই মাছ পুকুরে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ফলে এ অঞ্চলের মৎসচাষিরা এই পোনা চাষ করে ভাগ্য বদলের চেষ্টা করছেন।
জানা যায়, বহুদিন ধরে পূর্বের সনাতন পদ্ধতিতে পুকুরে মাছ চাষ করে আসছিলেন অনেক মৎস্য চাষি। কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার নাফাডাঙ্গা গ্রামের মৎসচাষী উমর ফারুক মন্ডলও গতানুগতিকভাবে এ চাষ করতেন। এরই মধ্যে উন্নত জাতের জি-৩ রুইপোনার সন্ধান পান রংপুরে ফারুক। গত সেপ্টেম্বর মাসে সেখান থেকে মাত্র ৫ হাজার টাকায় আধা কেজি রুই মাছের রেনু ক্রয় করেন তিনি। আধাকেজি থেকে তিনি আড়াই থেকে ৩ লাখ রেনু পান। গত শীতে দুইমাস শৈত্যপ্রবাহ শেষে চলতি এপ্রিল মাসে এক আঙ্গুল আকৃতির সমান ২৮৬ কেজি রেনু পোনা ৩৫০ টাকা দরে লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করেন তিনি। আরো ৮শ' কেজি রেনুপোনা বিক্রি করতে পারবেন বলে সরেজমিনে জানা গেছে। এছাড়াও পোনাগুলো এক বছর পুকুরে রাখতে পারলে আরো বেশি লাভবান হতে পারবেন ফারুক মন্ডল। ফলে তার পুকুরের রুই পোনার বৃদ্ধি দেখে অনেক মৎসচাষি রুই পোনা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
মৎস্যচাষি ফারুক মন্ডল বলেন, এ রুই মাছ দ্রুত বর্ধনশীল এবং লাভও প্রচুর। তাই চাহিদা অনেক। ৫০০ গ্রাম রুই পোনা উৎপাদনে খাবার ও পরিচর্যা বাবদ খরচ হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। এ মাছ বিক্রি করলে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা আমার লাভ হবে বলে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআর বাংলাদেশের সমন্বিত কৃষি ইউনিটের টিম লিডার বিদ্যুৎ কুমার সাহা বলেন, সাধারণ রুই মাছের তুলনায় এ মাছের বৃদ্ধি ৩০ গুণ বেশি। এ মাছ চাষে চাষিদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা বিনামূল্যে এই রেনু পোনা সরবরাহ করছি যাতে কুড়িগ্রামে মৎস্য চাহিদা ও পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। এছাড়াও মৎস্য চাষিরা যাতে লাভবান হন সেটিও আমাদের উদ্যেশ্য।