টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় উচ্চ ভিটামিনসমৃদ্ধ বল সুন্দরী কুল বরই চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। সু-স্বাদু আর পুষ্টিমান হওয়ায় ক্রেতারা এই বল সুন্দরী কিনছেন। অন্য কুল বরইয়ের চেয়ে এই কুলের চাহিদা থাকায় কৃষকরাও আগ্রহী।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক পর্যায়ে উপজেলার কয়েক জন কৃষক বাণিজিকভাবে শুরু করেছে এই বল সুন্দরী বরই চাষ। চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় তিন একর জমিতে এ কুলের চাষ হয়েছে। গাছের কুল বরই দেখতে বিভিন্ন এলাকার লোকজন ভিড় করছেন এবং আবাদে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকেই ওইসব কুল চাষিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ মৌসুমে কুলের ভালো ফলন হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় ধনবাড়ী পৌর শহরের চালাষ পশ্চিম পাড়া গ্রামের কুল বরই চাষি মো. আশরাফ আলী ও আলিম হোসেনের সঙ্গে। তাঁরা দু’জনে মিলে ৬০ শতক জমিতে বল সুন্দরী কুল বরই চাষ করেছেন। প্রতিটি গাছ ৫ থেকে ৬ হাত উঁচু। বাগান পরিচর্যায় কাজ করছে ৬/৭ জন শ্রমিক। গাছে ফলন হয়েছে ভালো। থোকাও-থোকাও ঝুুলছে পাকা বল সুন্দরী। ফলের আকারে বড়, দেখতে ঠিক আপেলের মত। খেতেও সু-স্বাদু। ইতিমধ্যে কুলগুলো বাগান থেকেই পাইকারী ৭০/৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মো. আশরাফ আলী বলেন, ‘‘৬০ শতক জমিতে বল কুল সুন্দরী বরই চাষাবাদে স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ নিই। চারা রোপনের প্রথম বছরেই ফল আসে। একটি গাছ থেকে ৫/৬ বছর ফল পাওয়া যায়। অন্য ফলের তুলনায় খরচ কম, লাভ বেশি। সকল খরচ বাদে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা লাভ পাওয়া যাবে। এলাকার কৃষকরা এখন বল কুল সুন্দরী বরই চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে।’’
অপর চাষি সৌরভ আহমেদ বলেন, ‘‘২ বিঘা জমিতে বল কুল সুন্দরী ও কাশমেরী জাতে কুল বরই বাগান করেছি। গতবারের তুলনায় এবার ফল এসেছে কয়েকগুণ। ২/৩ দিন পরপর গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করা যায়। এবার আশা করছি ভালো লাভবান হতে পারবো।’’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ান ও ভারতীয় জাতের বল সুন্দরী কুল দেখতে সুন্দর। খেতেও সু-স্বাদু। এ কুল বরই চাষে খরচ কম। অন্য ফল চাষের চেয়ে বেশি লাভবান হওয়ায় যায়। এ অঞ্চলে বাণিজিকভাবে কোনো কুল বরই চাষ হয় না। যে সব কৃষকরা ফল চাষের সাথে জড়িত তাদেরকে কুল চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আশা করি আগামী বছর থেকে বল সন্দুরী কুল বরই চাষ বৃদ্ধি পাবে।’’