ঢাকা   মঙ্গলবার
২৬ নভেম্বর ২০২৪
১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নতুন জাতের বাউ মুরগি পালনে স্বপ্ন বুনছেন খামারিরা

agri24.tv

প্রকাশিত: ১৮:৪৪, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

নতুন জাতের বাউ মুরগি পালনে স্বপ্ন বুনছেন খামারিরা

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একটি নতুন জাতের মুরগি উদ্ভাবন করেছেন, যা দেখতে দেশি মুরগির মতো হলেও শারীরিক বৃদ্ধি ব্রয়লার বা বিদেশি জাতের মুরগির মতো। এই মুরগিটি বর্তমানে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং অনেক খামারি এর মাধ্যমে সফলতা অর্জন করেছেন। মাত্র ৪০-৪২ দিনে এই মুরগির ওজন ১ কেজি ছাড়িয়ে যায়।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার আঙ্গারু গ্রামে এই মুরগির জনপ্রিয়তা বাড়ছে, যেখানে স্থানীয়রা একে "বাউ মুরগি" নামে চেনে। এখানে ৩০টিরও বেশি খামারে এই জাতের মুরগি পালন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ আলী এবং অধ্যাপক ড. মো. বজলুর রহমান মোল্লা দীর্ঘ গবেষণার পর 'বাউ ব্রো' নামক দুটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেন, যা বাউ-ব্রো-হোয়াইট এবং বাউ-ব্রো-কালার নামে পরিচিত।

২০১৪ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) এসপিজিএর প্রকল্পের আওতায় এই জাত দুটি উদ্ভাবনে সফলতা অর্জিত হয়। বর্তমানে, এই মুরগিগুলি টেকসই প্রযুক্তি হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং প্রচলিত ব্রয়লার মুরগির মতো ঘরে পালন করা যায়।

আঙ্গারু গ্রামের খামারি শাহিদা খাতুন জানান, পল্লীকর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সহযোগিতায় তিনি প্রথম পর্যায়ে ১৫০টি বাউ মুরগি নিয়েছিলেন। মাত্র ৪৫ দিনে তাদের গড় ওজন ১ কেজি ৩০০ গ্রাম হয়েছে এবং তিনি লাভবান হয়েছেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে তিনি আরও ৫০০টি বাচ্চা নিয়ে পালন করবেন।

অন্য খামারি আম্বিয়া খাতুন জানান, বাউ মুরগি পালনে কোনো সমস্যা নেই এবং রোগ-বালাইও নেই বললেই চলে। এই জাতের মুরগি দ্রুত বাজারজাত করা যায় এবং ওজনও ভালো আসে।

মানবমুক্তি সংস্থার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মারুফ হাসান বলেন, বাকৃবির উদ্ভাবিত বাউ মুরগি উন্নত জাতের একটি মুরগি। খামারের বায়োসিকিউরিটি নিশ্চিত করে নিয়মিত টিকা প্রদানসহ লাভবান হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. স্বপন চন্দ্র দেবনাথ জানান, বাউ মুরগির কারণে অনেক খামারি লাভবান হয়েছেন। ব্রয়লার মুরগির তুলনায় এটি বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং এর স্বাদও দেশি মুরগির মতো।

অধ্যাপক ড. মো. বজলুর রহমান মোল্যা বলেন, বাউ মুরগি এখন সবার কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে। এটি সুস্বাদু, মৃত্যুহার কম এবং উৎপাদন বেশি হওয়ায় এর চাহিদা বেড়েছে। শুরুর দিকে বিনামূল্যে বাচ্চা সরবরাহ করা হয়েছিল এবং বর্তমানে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে এটি দ্রুত সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

সর্বশেষ