কুমিল্লায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন খামার ও ব্যক্তিপর্যায়ের ডিম ও মুরগি উৎপাদনকারীরা। ডিমের উৎপাদন কমেছে দৈনিক ৫ লাখ। তাই বাড়তি চাহিদা ও বাজারে সরবরাহ কমার অজুহাতে অতিরিক্ত দাম হাঁকাচ্ছেন দোকানিরা। প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, চাহিদা বাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তারাও ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করছেন।
আগস্টের গোমতী নদীর ভাঙন আর উজানের ঢলের ভয়াবহ বন্যা দেখে কুমিল্লাবাসী। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার খামার। অসংখ্য পোল্ট্রি খামারির পুরো বিনিয়োগ ভেসে গেছে বানের জলে। এখনও সে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি খামারগুলো। দৈনিক ৪ থেকে ৫ লাখ ডিম উৎপাদন কমেছে জেলায়। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কেউ কেউ ঋণ নিয়ে চেষ্টা করছে ঘুরে দাঁড়ানোর। বন্যায় সব হারিয়ে পথে বসেছেন অসংখ্য খামারি।
বুড়িচং উপজেলার ১৭টি খামার থেকে প্রায় ৫০০ ঘরে বায়োগ্যাসের ব্যবহার ছিল। তবে বন্যায় বিপর্যয় নেমে আসে খামারগুলোতে। কাজ হারিয়েছেন অসংখ্য শ্রমিক। পোলট্রি খাতে ক্ষতি প্রায় ২৯৪ কোটি টাকা। শুধু ডিম উৎপাদনকারী খামারে ক্ষতি প্রায় দেড়শ' কোটি টাকা। খাবারের দাম বৃদ্ধি পেলেও মান কমেছে, তার প্রভাব পড়ছে উৎপাদনে- বলছেন খামারিরা।
কুমিল্লায় গড়ে প্রতিদিন উৎপাদন হয় ১৭ থেকে ১৮ লাখ ডিম। বন্যায় ক্ষতির প্রভাবে ডিমের উৎপাদন কমেছে প্রায় ৫ লাখ।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের পুনর্বাসন কাজ করছে সরকার- বলছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা। বুড়িচংয়ের উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমরা ওষুধ দিয়ে সবগুলো ফার্মের জীবাণুনাশের কাজ করেছি । এছাড়া পানিবাহিত রোগ যাতে সংক্রামিত না হয় এবং সঠিকভাবে টিকা যেন দিতে পারে খামারিরা সেই বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’
কুমিল্লার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চন্দন কুমার পোদ্দার বলেন, ‘বন্যায় এবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রাণিসম্পদ খাত। বিশেষ করে ডেইরি খামার ও পোলট্রি খামারগুলো। এই পোলট্রি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে আনুমানিক ১০ থেকে ৩০ ভাগ ডিম উৎপাদন কমে গেছে।’
খামারিদের পুনর্বাসনে মুরগির খাদ্য ও ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ এবং মান রক্ষায় সরকারের কঠোর নজরদারি চান পোল্ট্রি সংশ্লিষ্টরা।