সাতক্ষীরায় প্রথমবারে মত বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠছে বেলজিয়াম জাতের হাঁসের খামার। প্রাপ্ত বয়স্ক প্রতিটি হাঁসের ওজন হয় ৪ থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত। এই হাঁসের মাংস ও ডিম বেশ সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে দিন দিন বাড়ছে চাহিদাও।
সাতক্ষীরা সদরের কাসেমপুর গ্রামের ইসলাম আলী। কয়েক বছর আগে ৩ লাখ টাকা খরচে শুরু করেন ৩০০টি বেলজিয়াম জাতের হাঁস পালন। বর্তমানে এই খামারে হাঁসের সংখ্যা এক হাজার ৪০০টি। বছরে তার আয় ১০ লাখ টাকা।
এই খামারি জানান, মাংস উৎপাদনের জন্য ৪৫ দিন পর পর হাঁস বিক্রি হয় খামার থেকে। তবে চলতি বছর এই খামারে মাংসের পাশাপাশি বাচ্চা উৎপাদনও শুরু হয়েছে। তার কাছ থেকে হাঁসের জাত সংগ্রহ করে পালন করছেন অনেকে।
খামারি ইসলাম আলী বলেন, 'গতবার করেছি ৭শ', এবার করেছি ১২শ'। আশা আছে ২০-২৫ লাখ টাকা লাভ থাকবে।'
ক্রেতাদের মধ্যে একজন জানান, খামারটা দেখতে এলাম। আমার ছেলেও হাঁস পছন্দ করে। আর হাঁস কেনার জন্যই মূলত আসা।
ইন্ডিয়ান, বেইজিং, খাকী ক্যাম্পবেল জাতের হাঁসের বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক খামার রয়েছে জেলার বিভিন্ন এলাকায়। মূলত ৪৫ দিনের মধ্যে একটি হাঁসের ওজন হয় ৩ কেজি পর্যন্ত। এর ডিম ও মাংস সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে চাহিদাও রয়েছে বেশ। স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে হাঁসের বাণিজ্যিক খামার গড়ে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব, বলছেন খামারিরা।
খামারিদের মধ্যে একজন জানান, ১০০ ডিম হ্যাচারিতে বসালে ৭৫% বাচ্চা উঠে। একটা বাচ্চা বিক্রি হয় ৯০ টাকা। কিন্তু একটা হাঁস ওজনে বিক্রি করলে লস।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, হাঁস পালনে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে ডাকপ্লে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এসএম মাহবুবুর রহমান বলেন, 'যারা ক্ষুদ্র খামারিরা আছে তারা হাঁস পালনের জন্য মনোযোগী হবে। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতা বিশেষ করে ভ্যাকসিন এবং টেকনিক্যাল সাপোর্টও আমরা দিয়ে থাকবো।'
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সাতক্ষীরার বিভিন্ন অঞ্চলে ছোট-বড় মিলিয়ে দুই শতাধিক হাঁসের খামার রয়েছে। এরমধ্যে বেলজিয়াম জাতের হাঁসের খামার রয়েছে একটি। আগামীতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তাদের।