রাজধানী ঢাকায় এডিস মশাবাহিত জিকা ভাইরাস রোগী পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। গত তিন মাসে ঢাকায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত অন্তত ৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আইইডিসিআরের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. নওশের আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ১৫৫টি নমুনা পরীক্ষা করে আটজনের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। তারা সবাই ঢাকার বাসিন্দা। এর মধ্যে দুজন উত্তরার বাসিন্দা। এছাড়া মহাখালী, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, শ্যামলী, বারিধারা ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একজন করে রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তরা চিকিৎসা নিয়ে পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে বাসায় অবস্থান করছেন। তাদের কারও দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো ইতিহাস নেই। তার মানে সংক্রমণটা দেশের ভেতরেই হয়েছে। গত বছরও পাঁচজনের জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। ২০১৪ সালে প্রথম দেশে জিকা ভাইরাসের রোগী পাওয়া যায়। এ জন্য রোগটি নতুন কিছু না। কিন্তু যেহেতু পরীক্ষা করা হয় না তাই এটি শনাক্তও হয় না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাস সংক্রমণ হলে শিশুর জন্মগত রোগ মাইক্রোসেফালি অর্থাৎ মস্তিষ্ক ও মাথার আকার তুলনামূলক ছোট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে স্নায়ুর অবসজনিত গুলেন বারি সিনড্রোম হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
বিএসএমএমইউর উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, গর্ভবতী অবস্থায় জিকা হলে সন্তানের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। এই রোগ এডিস মশাবাহিত হলেও সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ (এসটিডি) হওয়ায় যৌন ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে স্বামীরও হতে পারে। বাংলাদেশে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি এই মুহূর্তে না থাকলেও ভবিষ্যতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সতর্ক থাকতে হবে৷ জিকা ভাইরাস, ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত সব রোগ থেকে বাঁচতে মশা নিধনের বিকল্প নেই।