ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। এই মাছ স্বাদে অতুলনীয় ও গন্ধের জন্য দেশ ও বিদেশে রয়েছে এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা। এই অতুলনীয় স্বাদের জন্য ইলিশকে মাছের রাজাও বলা হয়। এই ইলিশ দিয়ে তৈরি হয় নানান ধরনের মুখরোচক খাবার। তবে ইলিশ দিয়ে প্রথমবারের মত কৌটাজাতকৃত খাদ্য তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) এর এক দল গবেষক যার নেতৃত্ব দেন অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব।
ইলিশ অধিক আমিষ ও চর্বিযুক্ত মাছ। ইলিশের চর্বিতে বিদ্যমান ওমেগা-৩ নামক অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড যা রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায় এবং শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখে। ইলিশে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড থাকার কারণে হিমায়িত করা হলেও এটি জারিত হয়ে এর গুণগত মান দীর্ঘ সময় ভাল থাকে না। আবার চর্বিযুক্ত হওয়ায় ইলিশ মাছ শুঁটকি হিসাবেও দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় না। এই প্রেক্ষাপটে প্রায় দুই বছর সময় ধরে গবেষণা করে ইলিশের স্বাদ অক্ষুণ্ণ রেখে দীর্ঘদিন সংরক্ষণযোগ্য কৌটাজাতকৃত পণ্য তৈরির প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন শেকৃবি এর এই গবেষকদল। এই গবেষণাটি বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য অধিদপ্তরের সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট (SCMFP) এর অর্থায়নে পরিচালিত হয়।
আজ ৩০ মার্চ শনিবার সকাল ১০ টায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলিশ ও অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের ক্যানিং এর উপর একটি কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাছের কৌটাজাতকরণের বিভিন্ন দিক এবং বাংলাদেশে এই শিল্পের সম্ভাবনা তুলে ধরেন গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব। তিনি বলেন, তার পরিচালিত গবেষণায় কৌটাজাতকৃত ইলিশকে এক বছর পর্যন্ত রেখে পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, এর গুনগত মান অনায়াসেই ভাল থাকে । এই সময়ের মাঝে জারণ ক্রিয়া তেমন প্রভাব ফেলে না এবং কৌটাজাত ইলিশে এন্টি অক্সিডেন্ট দেয়ারও প্রয়োজন হয় না। এর মাঝে কোনো অনুজীবের বিকাশও ঘটেনি। এর স্থায়িত্ব বা শেল্ফ লাইফ এবং গুনগতমান এক বছরের বেশী সর্বোচ্চ আরো কতদিন থাকে তা পর্যবেক্ষণ কাজ এখনো চলমান রয়েছে।