
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর উপর দিয়ে বয়ে চলা ছোট যমুনা নদীতে চলছে যেন ঝিনুক তোলার প্রতিযোগিতা। একদল নারী-পুরুষ নদীর পানিতে ডুব দিচ্ছে, কেউবা আবার পানির নিচ থেকে দুই হাতে ঝিনুক তুলছে। এখন নদীর পানি কমে যাওয়ায় অল্প পানিতে অধিক ঝিনুক পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য প্রতিদিন সকালে ঝিনুক তুলছেন আলাদীপুর ইউপির সুর্যপাড়ার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন।
ফুলবাড়ীর খয়েরবাড়ী ইউপির ছোট যমুনা নদীতে এই দৃশ্য এখন প্রতিদিনের। নদী থেকে ঝিনুক তুলে ভিতরের অংশ খেয়ে বাকি অংশ বিক্রি করে ভালো আয় হচ্ছে তাদের। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নারীরাও দরিদ্র সংসারে খাবারের পাশাপাশি বাড়তি আয়ের জন্য নদী থেকে ঝিনুক তুলছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পরিশ্রম করে ৬০০-৭০০ টাকাও আয় করছেন অনেকে।
এডওয়ার্ড কিসকু নামের একজন বলেন, ঝিনুকগুলো কুড়িয়ে নিয়ে বাড়ির পাশে স্যাঁতসেঁতে জায়গায় রেখে দেই, এতে এক সপ্তাহ পর্যন্ত তাজা থাকে। এরপর ঝিনুক ভেঙে ভেতরের নরম অংশ রান্না করে খাই। আর খোলসগুলো ১০ টাকা কেজি এবং ৪০ টাকা ডালি হিসেবে বিক্রি করি। এতে খাবারের চাহিদা পূরণ হচ্ছে এবং বেশ আয়ও হচ্ছে। প্রতিদিন অন্তত ৭০/৮০ কেজি ঝিনুক পাই। তবে অনেক সময় ঝিনুকের খোলসে হাত-পা কেটে আহত হই।
জানা যায়, বিরামপুর উপজেলার কয়েকজন ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে শামুক ও ঝিনুক ক্রয় করে আসছেন। এসব শামুক-ঝিনুক কুড়িয়ে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন অনেক পরিবার। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা ৩৫০ টাকা মণ কিনেন এবং এটা দিয়ে চুন তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেন।
ফুলবাড়ী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাশেদা বেগম বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় শামুক-ঝিনুক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এরা যেসব জলাশয়ে থাকে সেখান থেকে ময়লা-আবর্জনা খেয়ে পানি দূষণমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। এজন্য এদের প্রকৃতির ফিল্টার বলা হয়। বণ্যপ্রাণী নিধন আইনে প্রাকৃতিক উৎস্য থেকে শামুক-ঝিনুক আহরণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এগ্রি২৪.টিভির বিদেশ, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা সিভি ও নিউজ পাঠান agri24.tv@gmail.com এই ইমেইলে।