মাছ চাষের জন্য পুকুর এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। তাই এখনই সারাবছরের মাছ চাষের কাজ শুরু করতে হবে। এ সময় আপনি যেভাবে পুকুর তৈরি করবেন এবং পুকুর সংস্কারের যেসব ব্যবস্থা নেবেন, তার ওপরই সারাবছরের মাছের ফলন নির্ভর করবে। এ সময় মাছের রোগ প্রতিরোধ করতে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।
মাছের রোগ ও প্রতিকার
চারা পোনার রোগ মৌসুমের শুরুতেই চোখে পড়তে পারে। যেমন- গায়ে ঘা, পোনার গায়ে কালগুটি রোগ কিংবা সাদাগুটি রোগ। সব সময় পোনাগুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। রোগের লক্ষণ দেখামাত্র প্রতিকারের ব্যবস্থা নিতে হবে। মাছের পোনার কালগুটি রোগ হলে রোগাক্রান্ত পোনাগুলোকে প্রতি লিটার পানিতে ৩ এমজি পিকারিক অ্যাসিড গুলে ওষুধের মিশ্রণে ১ ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখতে হবে। তারপর সেগুলোকে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে আবার পুকুরে ছাড়তে পারবেন। তাতে পোনার কালগুটি রোগের নিরাময় হবে।
মাছের পোনার সাদাগুটি রোগ হলে চারা পোনাগুলোকে প্রতি ৫ লিটার পানিতে ১ মিলিলিটার ফরমালিন গুলে ওষুধ মিশ্রণ তৈরি করে তাতে ৭-১০ দিন প্রতিদিন ১ ঘণ্টা করে ডুবিয়ে রাখতে হবে। ফলে চারার সাদাগুটি রোগ শেষ হয়ে যাবে। তখন সেগুলোকে পানিতে ধুয়ে আবার পুকুরে ছাড়তে হবে।
চারার গায়ে ঘা হলে সেগুলোকে প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম কেএমএনও-৪ গুলে পোনা ১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে। তারপর সেগুলোকে পুকুরে ছেড়ে দেবেন।
বড় মাছের পুকুরেও কয়েকটি রোগ এ সময় দেখা যাবে। যেমন- মাছের কানকোয় ও গায়ে অসংখ্য আরগুলাস উপদ্রব হতে পারে। এটা দমন করার জন্য পুকুরে নুভান নামক একটি ওষুধ প্রতি বিঘায় ১৩০ মিলিলিটার হারে প্রয়োগ করতে হবে। ওষুধটি প্রয়োগ করে কয়েক দফা জাল টেনে ওষুধটি পানির সাথে মিশিয়ে দিন। ১৫ দিন পর আরগুলাস দমন না হলে পুনরায় একই হারে ওষুধটি প্রয়োগ করতে পারেন।
এ ছাড়া বড় মাছের গায়ে ক্ষতরোগ হতে পারে, ফুলকা ও পাখনায় পচন রোগ দেখা যেতে পারে কিংবা চোখ ফোলা রোগও দেখা যেতে পারে। এ রোগগুলো দমনের জন্য সালফাজল অ্যাসিড অথবা সালফাজিন নামক ওষুধের যে কোনো একটি ১০০ গ্রাম প্রতি কেজি পরিপূরক খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে পুকুরের মাছকে ৫-৭ দিন খেতে দিন। মাছের রোগের নিরাময় হবে।
তারপর পুকুরে ১৩-২০ কেজি চুন প্রতি বিঘা হারে প্রয়োগ করতে হবে। পুকুরের পানিকে শোধন করার জন্য বিঘাপ্রতি ৬৫০ গ্রাম কেএমএনও-৪ ওষুধ পানিতে গুলে পুকুরে দিতে পারেন। সূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস।