চুয়াডাঙ্গায় ভুট্টা ক্ষেত ‘ফিউজোরিয়াম স্টকরট’ নামে এক ধরনের ছত্রাকজনিত রোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষক বলছে, আক্রান্ত ক্ষেতে ভুট্টার ফলন অর্ধেকে নেমে এসেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভাষ্য অনুযায়ী, জমির পরিমাণের অনুপাত অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ ভুট্টার আবাদ হয়। জেলার অন্যতম প্রধান অর্থকরি ফসল ভুট্টার এ ক্ষতিতে দিশাহারা কৃষক।
কৃষি বিভাগ বলছে, তাদের পরামর্শ উপেক্ষা করে একই জমিতে বারবার ভুট্টা আবাদ এবং অধিক ঘন সারিতে বীজ বপন করায় এ রোগ দেখা দিয়েছে। জেলার দামুড়হুদা উপজেলার ইব্রাহিমপুর গুচ্ছগ্রামের ভুট্টা চাষি জুড়োন মন্ডল বলেন, এ বছর তিনি ৬ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন। এর মধ্যে ২ বিঘার ভুট্টা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে তার ফলন অর্ধেকে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘ভুট্টা গাছে মোচা আসার সময় হঠাৎ গাছ শুকিয়ে যেতে শুরু করে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে জমিতে দস্তা সার প্রয়োগ করি। তার পরও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।’
একই অবস্থা এলাকার রাহেন উদ্দিন, তুষার মিয়া ও সাহাদত হোসেনের। তাদের ১০ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ ছিল। বেশির ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চাষি আবদুস সাত্তার ২৫ বছর ধরে ভুট্টার আবাদ করছেন। এ বছর ১ বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন। হঠাৎ দেখতে পান ভুট্টার গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। একপর্যায়ে তার খেতের সব গাছ শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, ‘এ জেলায় এ বছর ৪৯ হাজার ৪২০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৪৯ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৪০ মেট্রিক টন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় কিছুটা ঘাটতি হতে পারে। তবে সব খেতের ভুট্টা সংগ্রহ শেষ না হলে প্রকৃত অবস্থা নিরূপণ সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘জমির পরিমাণের অনুপাত অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ ভুট্টার আবাদ হয়। এ জেলার চাষিরা অধিক ফলনের আশায় ঘন সারিতে ভুট্টাবীজ বপন করায় অভ্যস্ত এবং একই জমিতে বারবার ভুট্টার আবাদ করে। এ কারণেই এ জেলার কিছু ভুট্টা খেত ‘ফিউজোরিয়াম স্টকরট’ নামে ছত্রাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আগামীতে কৃষি বিভাগের পরামর্শমতো বীজ বপনের জন্য কৃষককে উদ্বুদ্ধ করা হবে।’