সাগর ও নদীর মাছ ইলিশ প্রাকৃতিক নিয়মে বড় হচ্ছে চট্টগ্রামের একটি পুকুরে। পোনা থেকে ৩ মাসে ৩-৪ ইঞ্চি সাইজের হওয়া হাজার হাজার ইলিশ আগামী ৩ মাসের মধ্যে আধা কেজিতে পরিণত হবে আশা মৎস্যচাষীদের। পুকুরে ইলিশ দেখে আশ্চর্য্য স্বয়ং জেলা মৎস্য কর্মকর্তারা। বলেন, এগুলো বড় হলে দেশে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।
বাঙালির ইলিশ প্রীতি মাত্রা ছাড়া। ইলিশে বাঙালির প্রেম পুরোনো, অকৃত্রিম। কিন্তু সাধ থাকলেও দামের জন্য এখন অনেকের কাছে অধরা ইলিশ। তাই রাশি-রাশি ইলিশ দেখলেও তাকিয়ে থাকা ছাড়া অনেকেরই কিছু করার থাকে না।
এবার সেই ইলিশ নিয়ে এলো সুসংবাদ। চট্টগ্রামের সমুদ্র উপকূলবর্তী কাট্টলীর আরবান ফামার্স’র একটি পুকুরে মিললো হাজার হাজার ইলিশ। দুই দশক ধরে এখানে একাধিক পুকুরে চলছে মাছের চাষ। তিনমাস আগে এর একটিতে আগ্রহবশত পাশের খাল থেকে সমুদ্রের পানি ঢুকান মৎস্যচাষীরা। এসময় তারা দেখতে পান পানির সাথে ছোট ছোট ডিম। নাড়াচাড়া করে বুঝতে পারেন ইলিশ মাছের ডিম। তা যত্নকরে ছাড়েন পুকুরে। এরপরেরটা ইতিহাস।
তিনমাস পর ইলিশের অবস্থা স্বচক্ষে দেখার জন্য পুকুরে ফেলা হলো জাল। পুকুরে এসব টিকতে পারে কি না প্রশ্ন ছিল সবার মনে? জাল টেনে আনার পর সবার চোখে বিস্ময়। জালে উঠে এসেছে ৩-৪ ইঞ্চি সাইজের হাজার হাজার ইলিশ। আনন্দে আত্মহারা সবাই। তাহলে তিনমাস টিকে গেল প্রাকৃতিক নিয়মে পুকুরে বেড়ে ওঠা ইলিশ। এবার সামনের দিনগুলোর অপেক্ষা।
দুই যুগ মৎস্যচাষের সাথে জড়িত আবু তৈয়ব। তিনি চাঁদপুরে পুকুরে ইলিশ চাষের প্রচেষ্টা চালিয়ে সফল হননি। এখানে কোনো উদ্যোগ ছাড়াই প্রাকৃতিক নিয়মে ইলিশ বড় হচ্ছে দেখে বেশ আনন্দিত।
আদর্শ কৃষকরা বললেন, আল্লাহর দান বঙ্গোপসাগরের পোনা পরিচর্যা না করে নষ্ট করা হচ্ছে। পুকুরে বেড়ে ওঠা ইলিশ চৈত্র ও বৈশাখে পানি ঢুকালে দ্রুত অনেক বড় হবে আশা তাদের।
উৎফুল্ল পুকুর মালিকের কল্পনায়ও ছিলনা এখানে ইলিশ বড় হবে।মৎস্য অফিসের সহায়তা নিয়ে আরো এগিয়ে যাওয়ার আকাংখা তার।
এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বললেন, পুকুরে ইলিশ পাওয়ায় আশাপাশে খুঁজতে হবে ব্রিডিং গ্রাউন্ড। এর ফলাফল দেশবাসীর জানা দরকার। এগুলো টিকে গেলে দেশে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলে মনে করেন চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সিভাস চন্দ্র চন্দ।
একটি ইলিশের ডিম থেকে হয় লাখো রেণু পোনা। পুকুরে ইলিশ টিকলে ও বড় হলে সারা বছরই পাওয়া যাবে ইলিশ। দেশের মৎস্য খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে আশা সকলের।