ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট ভাঙার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। বুধবার রাত ৯টায় সিন্ডিকেটের বৈঠক চলাকালে সিনেট ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তারা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে আওয়ামী সমর্থিত শিক্ষকদের আধিপত্য রয়েছে। শিক্ষার্থী সাইফ উল্লাহ সাইফ বলেন, “আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষক সংগঠন নীল দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়াসহ বেশ কয়েকজন এখনও সিন্ডিকেটে আছেন। এই সিন্ডিকেট ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং বিভিন্ন সংকটময় মুহূর্তে সরকারের পক্ষ অবলম্বন করেছে।” তিনি আরও বলেন, “এটি অবৈধ সিন্ডিকেট, যার মাধ্যমে ছাত্রদের জন্য কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়েমা হক বিদিশা বিক্ষোভের বিষয়ে মন্তব্য করেন, “সিন্ডিকেটের সভা চলাকালে শিক্ষার্থীরা বাইরে বিক্ষোভ করেছেন, তবে এতে সভার কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়েনি।” তিনি বলেন, "সিন্ডিকেটে পদাধিকারবলে ৯ জন সদস্য আছেন, যারা প্রশাসনিক দায়িত্বে রয়েছেন, আর যাদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের আপত্তি রয়েছে, তারা নির্বাচিত শিক্ষক প্রতিনিধিরা। তাঁদের বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা থাকতে পারে, যা আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।"
এদিকে, বুধবারের সভায় সিন্ডিকেটের ছয়জন নতুন সদস্য যোগদান করেছেন। চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত তিনজন সদস্য—অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক ড. আকা ফিরোজ আহমদ এবং অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ; সরকার কর্তৃক মনোনীত শিক্ষাসচিব; এবং একাডেমিক পরিষদ কর্তৃক মনোনীত সদস্য হিসেবে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান সভায় নতুন সদস্যদের স্বাগত জানান এবং সিন্ডিকেট সভার কার্যক্রম পর্যালোচনা করেন। সভায় বিভিন্ন প্রশাসনিক ও একাডেমিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, এবং পূর্ববর্তী সভার কার্যক্রমের অনুমোদনসহ জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যার মধ্যে ভর্তিসংক্রান্ত বিষয় ও ফিন্যান্স কমিটির সুপারিশও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এদিকে, শিক্ষার্থীরা সিন্ডিকেটের বর্তমান গঠন এবং সরকারের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ জানিয়ে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।