ঢাকা   বুধবার
১৬ এপ্রিল ২০২৫
২ বৈশাখ ১৪৩২, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬

মজুদ করছেন ব্যবসায়ীরা, পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৪২, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

মজুদ করছেন ব্যবসায়ীরা, পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি

রমজানে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক থাকলেও পহেলা বৈশাখের পর যেন হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত। অভিযোগ উঠেছে, ব্যবসায়ীরা এরই মধ্যে পেঁয়াজ মজুদের করার কারণে হঠাৎ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে পেঁয়াজের ভরা মৌসুমে দাম বৃদ্ধির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ ক্রেতারা। 

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আনিস বলেন, ‘খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি হালি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে দাম। কেন বেড়েছে বুঝতেছি না।’
 
আরেক বিক্রেতা আমজাদ বলেন, ‘দাম বাড়ার পেছনে খুচরা বিক্রেতাদের কোনো হাত নেই। পাইকারি বাজার থেকে যে দামে কিনি, সেই অনুযায়ী বিক্রি করি। আমরা নিজেরাও জানি না কেন এমন বাড়ল।’
 
তবে আড়তদাররা জানাচ্ছেন ভিন্ন কথা। তাদের ভাষ্য, এবার মুড়িকাটা পেঁয়াজে কৃষকরা দাম না পেয়ে লোকসান গুনেছেন। ফলে তারা হালি পেঁয়াজ সব বাজারে না ছেড়ে মজুতের দিকে ঝুঁকছেন। এতে সরবরাহ কমে গেছে, যার প্রভাব পড়েছে আড়ত, পাইকারি ও খুচরা- সব পর্যায়েই।
 
আরেক আড়তদার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজে এবার কৃষকরা ন্যায্য দাম পাননি। ফলে লোকসানের আশঙ্কায় অনেকেই এখনই পেঁয়াজ বিক্রি না করে মজুত করে রাখছেন। আর সেই সুযোগেই বাজারে সরবরাহ কমে গিয়ে তৈরি হয়েছে কৃত্রিম সংকট।
 
পেঁয়াজের দামের হঠাৎ এই ঊর্ধ্বমুখীতায় বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। তাদের দাবি, বাজারে নতুন করে সিন্ডিকেট শুরু হয়েছে। পাইকারি, মোকাম ও আড়তে এখন থেকেই নজরদারি বাড়াতে হবে, তা না হলে সামনে পেঁয়াজের দাম আরও বেড়ে যাবে।
 
মাইদুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, পুরো রমজানে যেখানে পেঁয়াজের দাম বাড়েনি, সেখানে এখন দাম বাড়াটা অস্বাভাবিক। এখন হালি পেঁয়াজের ভরা মৌসুম। সরকারের উচিত অবিলম্বে বাজারে মনিটরিং জোরদার করা। না হলে কোরবানির ঈদের আগে বাজার চরম অস্থির হয়ে উঠতে পারে।
 
এই পরিস্থিতিতে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ কমেছে ঠিকই, তবে যে হারে দাম বাড়ছে, তা অস্বাভাবিক। আবারও বাজার সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়েছে, যারা কৃত্রিম সংকট তৈরির মাধ্যমে মুনাফা লুটছে।
 
কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, পেঁয়াজের আকস্মিক দাম বৃদ্ধির বিষয়টি ব্যবসায়ীদের নেতিবাচক ব্যবসা চর্চার ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার এবং এ খাতে মধ্যসত্ত্বভোগীদের কারসাজির অংশ। আগে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসতে বিলম্ব হলেই এখানে দাম বেড়ে যেতো। এখন পেঁয়াজের আড়তদার, কমিশন এজেন্টস, দাদন ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ কিনে মজুত করে রাখছেন। সে কারণে দাম বেড়েছে। অন্যদিকে পেঁয়াজের বাজারে কোনো তদারকি হয় না। ভোক্তা অধিদফতর বা জেলা প্রশাসন এখানে কোনো তদারকি করে না।
 
তিনি আরও বলেন, আর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত, সে কারণে কৃষক বিক্রি করতে পারলো কি পারলো না, এটা তাদের মাথাব্যথা না। আর আমাদের এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর এখন অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে সব সময় কোনো না কোনো পণ্য নিয়ে খেলা, অতি মুনাফা করা।

এগ্রি২৪.টিভির বিদেশ, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা সিভি  ও নিউজ পাঠান agri24.tv@gmail.com এই ইমেইলে