ঢাকা   শুক্রবার
৩১ জানুয়ারি ২০২৫
১৮ মাঘ ১৪৩১, ০১ শা'বান ১৪৪৬

কাঁঠাল ও কলার চিপস, সাড়া ফেলেছে বাজারে

agri24.tv

প্রকাশিত: ১৫:৩৬, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫

কাঁঠাল ও কলার চিপস, সাড়া ফেলেছে বাজারে

মৌসুমি ফল উৎপাদনে পার্বত্য চট্টগ্রামের সুখ্যাতি দীর্ঘদিনের। বিশেষত পাহাড়ের গ্রীষ্মকালীন ফল আম, কাঁঠাল, আনারস ও বারোমাসি কলার কদর বেশি। দুর্গম যোগাযোগের ব্যবস্থায় সঠিক দামের অভাবে প্রতি বছর বাগানে ও পথেই নষ্ট হয় এসব মৌসুমি ফল। এতে কৃষক বঞ্চিত হয় সঠিক দাম থেকে। তবে মৌসুমি ফল দিয়ে চিপস তৈরি শুরু করেছেন রাঙামাটির তিন তরুণ উদ্যোক্তা। তাদের তৈরি পাহাড়ি কাঁঠাল ও কলার চিপস ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছে বাজারে।

রাঙামাটির আসামবস্তির বাসিন্দা সুবিমল, রিটম, প্রমোদ চাকমা। শিক্ষা জীবন শেষ করে আর দশ জনের মত চাকরির পিছনে না ছুটে হতে চেয়েছেন উদ্যোক্তা।  যেমন ভাবনা তেমন কাজ। অধিকতর প্রশিক্ষণ শেষে নিজ আঙ্গিনায় বাঁশের বেড়ার ছোট্ট একটি ঘরে কাঁঠাল ও কলার চিপস তৈরি করা শুরু করেন।

উদ্যোক্তা রিটম চাকমা জানান, প্রথমে কাঁচামাল বাজার থেকে সংগ্রহ করে সেগুলো চিপস তৈরি জন্য প্রস্তুত করা হয়। প্রতিবার ২ কেজি ফ্রাই করে পরে সেগুলো মেশিনে ডিউলিং শেষে মসলা মিশালেই প্রস্তুত হয়ে যাচ্ছে সু-সাদু কাঁঠালের চিপস্। একই প্রক্রিয়ায় তৈরি হচ্ছে কলার চিপস্ও।

আরেক উদ্যোক্তা প্রমোদ চাকমা জানান, আমদের আম, কাঁঠাল, কলা ও আলুর চিপস তৈরি প্রস্তুতি রয়েছে। ভিন্নতার মধ্যে কাঁঠাল ও কলা রয়েছে সেগুলো আগে শুরু করেছি। পরে ধাপে ধাপে বাকিগুলো তৈরি শুরু হবে। প্রতিকেজি কাঁঠাল থেকে তিনশো গ্রাম চিপস উৎপাদন করা যায়। ডিউলিং করে ডাইং শেষে কোন প্রকার ক্যামিকেল ব্যবহার না করে অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন পরিবেশে চলছে উৎপাদন প্রক্রিয়া। তারপর প্যাকেটে নির্দিষ্ট পরিমান চিপস্ দিয়ে সেটে দেয়া হচ্ছে মুখ।

মূল উদ্যোক্তা সুবিমল চাকমা জানান, আলু বা ভূট্টার চিপস্ সবাই খায়। কাঁঠালের চিসপ্ কি খেয়েছেন কেউ? সেই চিন্তা থেকেই আমাদের এই কাজ শুরু করা। প্রথমে ২০২২ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) পোষ্ট পারভেষ্ট টেকনোলজি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি।

তিনি আরও জানান, পাহাড়ে উৎপাদিত কলা ও কাঁঠালের দাম পাওয়া যায় না বললেই চলে আবার সংরক্ষণের ব্যবস্থাও নেই। কৃষক যেন উৎপাদিত ফলের সঠিক দাম পান সে জন্যই এই উদ্যোগ। অপতত দুইটি অনলাইন প্লাটফর্মে এই চিপস বিক্রি করা হচ্ছে। যা প্রতি প্যাকেট ৩০ টাকা করে।

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই চিপস বিদেশে রপ্তানিও স্বপ্ন দেখছেন এই উদ্যোক্তা। এই কারখানায় ছোট্ট মেশিনে প্রতিদিন ৩০০ প্যাকেট চিপস্ উৎপাদন করা সম্ভব হয়।

রাঙামাটি অঞ্চলের অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. নাছিম হায়দার জানান, উৎপাদন মৌসুমে আম, কাঁঠাল, আনারস ও কলা প্রচুর উৎপাদন হয় এবং বাজার ব্যবস্থাপনার কারণে অনেক ফল বাগানেই নষ্ট হয়। সেই ফলের এমন বিকল্প ব্যবহার করা গেলে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে পাহাড়ে। আর যারা কাজ শুরু করেছেন তাদের স্বাগত জানাই।