ফিলিপাইন জাতের আখ চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়েছেন বগুড়ার সারিয়াকান্দি এলাকার তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মোমিনুর রহমান মোমিন। নিজের জমিতে আখ চাষ করে তৈরি করছেন গুড়। আরও তিন একর জমিতে আখ চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
জানা যায়, আইটি সেক্টরে লেখাপড়া শেষে চাকরির পিছে না ছুটে কৃষির প্রতি ঝুঁকে পড়েন মোমিনুর। ২০২০ সালের প্রথম দিকে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সাইন্স এন্ড টেকনোলজি (আইসিটি) বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করেন। পরে ফিলিপাইন জাতের উচ্চ ফলনশীল কালো আখ চাষ শুরু করেন। নিজ জমিতে চাষ করেছেন ফিলিপাইন জাতের কালো আখ। ফিলিপাইনের কালো জাতের আখ সুমিষ্ট ও ব্যবসায়িকভাবে লাভজনক হওয়ায় আশপাশের চাষিরাও এ জাতের আখ চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
ফিলিপাইন আখ লম্বায় সাধারণত ১৪ থেকে ১৫ ফুট। দেশীয় আখের মতো হলেও আছে বেশ কিছু ভিন্নতা। এই আখের রস বেশি মিষ্টি, লাভও বেশি। প্রাথমিকভাবে তার ১১০ শতক জমিতে ১৫ হাজার আখের চাষ করেন পরীক্ষামূলকভাবে। এরপর তিনি বাণিজ্যিকভাবে ৩ একর জমিতে এ জাতের আখের চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন। ফলন ভালো হওয়ায় মোমিনের ক্ষেতে উৎপাদিত ৪০০ পিচ আখ নেওয়া হয়েছে ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্রে।
গুড় তৈরির কারিগর ইমাম হোসেন জানান, অন্যান্য জাতের আখ থেকে ফিলিপাইন জাতের আখটি ভিন্ন। এ জাতের আখের রস বেশি এবং মিষ্টিও। একটি আখ থেকে প্রায় ৩ লিটার রস পাওয়া যায়। ১৮ লিটার রস থেকে প্রায় ৩ কেজি থেকে ৪ কেজির মতো গুড় উৎপাদন করা যায়। যা খুবই দানাদার ও মিষ্টি।
চাষি মোমিনুর রহমান মোমিন জানান, লেখাপড়া শেষে চাকরির পিছে না ছুটে কৃষি কাজ শুরু করেন। তিনি কুষ্টিয়া জেলা থেকে চারা সংগ্রহের পর শুরু করেন ফিলিপাইন জাতের আখ চাষ। এখন তার খামারে দৈনিক ৭ থেকে ৮ জন লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তার উৎপাদিত আখ থেকে খাঁটি গুড় তৈরি করা হচ্ছে এবং নিজের নার্সিংকৃত চারা স্বল্প মূল্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানান, সারিয়াকান্দিতে এই প্রথম ফিলিপাইন জাতের আখের চাষ শুরু করেছেন কৃষক মোমিন। সেই আখ থেকে নিজেই গুড় উৎপাদন করছেন। যা সম্পূর্ণ নির্ভেজাল। যাদের লিভার এবং জন্ডিসের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য আখের রস খুবই উপকারী। আখে কিছু ফাইবার রয়েছে, যা মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয়। এ ছাড়া রমজানে ইক্ষুর রস মানুষের শরীরকে সুস্থ রাখে।