
বছর ঘুরে সোনালী আঁশ পাটের আবাদের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। তবে বাজারে বাড়ছে না পাটের কাঙ্ক্ষিত দর। পাট চাষাবাদে খরচের সঙ্গে বিক্রয় মূল্যে ব্যবধান বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় চাষিরা। পাটচাষিরা জানিয়েছন, ২০২৪ সালে প্রকারভেদে প্রতিমণ পাট ২৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা। এতে উৎপাদন ব্যয় আর বিক্রয় মূল্য ছিল সমান সমান। যে কারণে পাট চাষিদের চোখে-মুখে ছিল না হাঁসি।
পাট উৎপাদনে দেশের র্শীষ অবস্থানে ফরিদপুর। আর ফরিদপুরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাট আবাদ হয় সালথা উপজেলায়। এবারও এ উপজেলায় অন্তত ১২ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে পাট চাষাবাদ করা হয়েছে। যা মোট কৃষি জমির ৯০ শতাংশ। তবে চলতি মৌসুমে পাটের আবাদে সর্বক্ষেত্রে খরচ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
চাষিদের দাবি, এবার পাটের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ। তাই পাট উৎপাদন খরচের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরতে কৃষিবিভাগের সহযোগিতা চান তারা।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সালথা উপজেলার মাঠ থেকে পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর বর্তমানে পাট আবাদ নিয়ে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইতোমধ্যে বীজতলা থেকে পাটের চারা বের হতে শুরু করেছে। যারা আগাম বীজ বপণ করেছিলেন, তাদের ক্ষেতের পাটের চারা দুই থেকে তিন ইঞ্চি লম্বা হয়েছে। তাই পাটচাষিরা কেউ পাটের ক্ষেতে সেচ দিয়ে ভেজাচ্ছে, কেউ বা ক্ষেত থেকে আগাছা পরিস্কারের কাজ করছেন।
তবে শুকনো মৌসুমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে পানির দুষ্প্রাপ্যতাসহ পাট চাষের সাথে সম্পৃক্ত প্রায় সকল ধরনের উপকরণ ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি এবং উৎপাদিত পাটের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশার কথা জানিয়েছেন তারা।
সালথার পাটচাষি সহিদ মিয়া জানান, গত কয়েক বছর ধরে ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নামছে। সংকট এমন পর্যায়ে যে অনেক মেশিনেই পানি উঠছে না। তাই জমিতে সেচ দিতে খরচ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। সেই সঙ্গে সার, ওষুধের দাম তো বাড়ছেই। যে কারণে ব্যয়ের সঙ্গে আয় মেলাতে না পেরে হাপিয়ে উঠছে কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন শিকদার বলেন, বীজ বপণের সময় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কৃষকদের নিজ খরচে সেচ প্রদান করতে হয়েছে। এ কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হলে পাট জাগ দিতে সমস্যা হবে না। পাটের দাম ভাল সন্তোষজনক পেলে কৃষকরা লাভবান হবে বলে আমরা আশাবাদী।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনে বৈরী আবহাওয়া অনেক ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধি করে। তবে ভালভাবে পরিচর্যার মাধ্যমে উৎপাদন বাড়াতে পারলে ব্যয়ের হার কিছুটা কমবে।
এগ্রি২৪.টিভির বিদেশ, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা সিভি ও নিউজ পাঠান agri24.tv@gmail.com এই ইমেইলে