
ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় গরুকে আলু খাওয়াচ্ছেন রংপুরের কৃষকরা। তারা বলছেন, এবার একদিকে ব্যাপক দরপতন অন্যদিকে কোল্ড স্টোর গুলোতে নেই পর্যাপ্ত জায়গা। তাই পঁচে নষ্ট হওয়ার শঙ্কায়, নিতে হয়েছে এই সিদ্ধান্ত।
কখনও সিদ্ধ, কখনওবা কাঁচা। এভাবেই গরুকে আলু খাওয়াচ্ছেন রংপুরের গংগাচড়া উপজেলা আলমবিদিতর ইউনিয়নের কৃষক সামিউল ইসলাম। তিনি জানান, এবার পরিস্থিতি এমন যে, খেতের আলু বিক্রি করে লাভতো দূরের কথা উল্টো গুনতে হচ্ছে লোকসান। তাই বাধ্য হয়ে গরুকে খাওয়াচ্ছেন আলু।
সেখানকার কৃষকরা জানান, কৃষিকাজে যে অবস্থা তাতে কৃষকরা বাঁচার কথা না, আমরা বিজ যখন কিনেছি বেশি দামে কিনেছি, কিন্তু উৎপাদনের পর পণ্যের দাম পাই না। ১০ টাকা কেজি আলু বিক্রি করার পর যখন দেখলাম মুলধন উঠে না, বাড়িতে আলু রাখলে পঁচে যায় ফলে বাধ্য হয়েই গরুকে খাওয়াচ্ছি।
শুধু গঙ্গাচড়া নয়, এ চিত্র জেলার প্রায় সব উপজেলাতেই। কৃষকরা বলছেন, কোল্ড স্টোর গুলোতে আলু রাখার জায়গা পাননি তারা। বাড়িতে সংরক্ষণ করেও মিলছেনা ন্যায্যদাম। আবার বেশিদিন ফেলে রাখলে আছে পঁচে যাওয়ার শঙ্কাও। ফলে উপায় না পেয়ে নিতে হয়েছে এই সিদ্ধান্ত।
স্থানীয় এক আলু চাষী জানান, বাজারে আলু নেয়ার পর যে খরচ বাড়িতে আনার ভাড়া উঠে না, কোল্ড স্টোরেজে রাখতেই প্রতি কেজি আলু ৭ থেকে ৮ টাকা লাগে, কিন্তু প্রতি কেজি আলু ১০ টাকার বেশি বিক্রি করা যায় না।
রংপুরে হিমাগারগুলোর জায়গা সংকটের কথা স্বীকার করলেন কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা। সদুত্তর নেই ন্যায্যদাম না পাওয়ায় কৃষকদের দূরাবস্থার ব্যাপারে।
রংপুর কৃষি বিপণন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহীন আহমেদ বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে রংপুর বিভাগে ৩৯০টি অহিমায়িত মডেল ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি এ ঘরগুলো দেখে আমাদের কৃষকরা তাদের উদ্যোগে আলু সংরক্ষণের জন্য অহিমায়িত ঘর নির্মাণ করবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এ বছর রংপুর জেলায় আলু উৎপাদন হয়েছে ১৯ লাখ ৪৩ হাজার ৭১০ টন। যা গতবছরের তুলনায় প্রায় চার লাখ টন বেশি। বিপরীতে জেলায় ৪০টি কোল্ড স্টোরেজে ধারণ ক্ষমতা মাত্র চার লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টন।
এগ্রি২৪.টিভির বিদেশ, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা সিভি ও নিউজ পাঠান agri24.tv@gmail.com এই ইমেইলে