
নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর মারাত্মকভাবে নিচে নেমে গেছে। গভীর নলকূপ দিয়েও মিলছে না প্রয়োজনীয় পানি। এতে মাঠের পর মাঠ ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। সেচের অভাবে কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
সংশ্লিষ্টদের মতে, টানা খরার কারণে পানির সংকট আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। তারা বলছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে পানি কম প্রয়োজন হয় এমন ফসল চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার খড়িবাড়ী মাঠের চাষিরা জানান, শত শত বিঘা জমির ধান এখন মারাত্মক হুমকিতে। কেউ কেউ নিজ উদ্যোগে গভীর নলকূপ স্থাপন করেও কাঙ্ক্ষিত পানি পাচ্ছেন না।
স্থানীয় কৃষক শাহাদত বলেন, ‘আমি তিনশ ফুট গভীরেও পানি পাইনি। এখন ফসল পুড়ে যাওয়ার অবস্থায়। বিদ্যুৎ লোড বাড়িয়ে নলকূপ সচল রাখতে দফতরে ধরনা দিয়েও কোনো সাড়া পাচ্ছি না।’
খড়িবাড়ী মাঠেই প্রায় এক হাজার বিঘা জমির ধান চাষ হুমকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বরেন্দ্র অঞ্চলে চার হাজার গভীর নলকূপ এবং ছোট-বড় প্রায় ৫৬ হাজার অগভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। কিন্তু সাপাহার, পোরশা ও নিয়ামতপুর এলাকায় পানির স্তর ১৮০ থেকে ২০০ ফুটের নিচে নেমে গেছে।
বিএমডিএ নওগাঁ রিজিওনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম রেজা বলেন, ‘হার্ড বরেন্দ্র এলাকায় ধান চাষের জন্য সর্বোচ্চ ৯৮০ ঘণ্টা সেচ দেয়া নির্ধারিত আছে। এত কম পানিতে ধান উৎপাদন সম্ভব নয়। এজন্য আমরা কৃষকদের বিকল্প ফসলের দিকে যেতে পরামর্শ দিচ্ছি।’
গবেষণা বলছে, বরেন্দ্র অঞ্চলে প্রতিবছর পানির স্তর ১ থেকে ২ ফুট করে নিচে নেমে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে চাষাবাদ ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়ছে। ফলে কম পানি ব্যবহার করে চাষাবাদ করা যায় এমন ফসলের দিকে ঝোঁক বাড়াতে কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এগ্রি২৪.টিভির বিদেশ, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা সিভি ও নিউজ পাঠান agri24.tv@gmail.com এই ইমেইলে