
কিশোরগঞ্জের হাওরের চরাঞ্চল এখন সোনালি রঙে রাঙানো। গত কয়েক বছরে কৃষকরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকেছেন। যেখানে উৎপাদন খরচ কম, লাভ বেশি, এবং বন্যা কিংবা খরার ভয় নেই। এবারও ফলন হয়েছে বাম্পার। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এই সোনালি ফসল।
রোদের ঝিকিমিকিতে হাওরের প্রান্তরে যেন মিটিমিটি হাসছে সোনালি ভুট্টার সারি। দূর থেকে দেখলে মনে হয় রোদে শুকাতে দেয়া হয়েছে একরাশ কাঁচা সোনা!
কৃষক-কৃষাণিরা এখন ব্যস্ত তাদের স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে।
কালের স্রোতে পাল্টে গেছে ঘোড়াউথরা। হারিয়েছে তার ভয়াল যৌবন। জেগে উঠেছে চর, আর সেই চরেই শুরু হয়েছে জীবনের নতুন অধ্যায়। সত্তরের দশক থেকে এই চরে সবজি চাষে জীবিকা নির্বাহ করতেন কৃষকেরা। কিন্তু অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ না পেলে খুব একটা লাভের মুখ দেখা যেত না। তবে যখন দেশের পোল্ট্রি ও ফিড মিল খাতে ভুট্টার চাহিদা বেড়ে যায়, তখন চরাঞ্চলের কৃষকদের চোখে জ্বলতে থাকে নতুন সম্ভাবনার আলো।
চাষিদের মধ্যে একজন বলেন, 'ভুট্টা বিক্রি করে আমাদের লাভ ঞয়। প্রায় অর্ধেক লাভ। আবার পাতা গরুকে খাওয়াতে পারি। মানে ভুট্টার আবাদ করলে বিভিন্নভাবে লাভ হয়।'
এ বছর কিশোরগঞ্জে ১২ হাজার ১০০ হেক্টর জমি থেকে ১২ হাজার ২১০ টন ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১২ হাজার ২১০ হেক্টরে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। ফলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা।
কৃষকদের মধ্যে একজন বলেন, 'বড় ব্যবসায়ী, পাইকার আছে, বড় বড় ব্যাপারী আছে। তাদের কাছে বিক্রি করি। কোনোদিন লাভ হয় আবার কোনোদিন হয় না।'
ভুট্টা উৎপাদনে কৃষকদের বীজ নির্বাচন থেকে শুরু করে রোগবালাই দমনে সার্বিক সহায়তা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাদিকুর রহমান বলেন, 'বোরো ধান কর্তনের রও গেই ভুট্টা কর্তন করা সম্ভব হয়। বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কৃষক ভুট্টার দিকে ঝুঁকছে। আবার ভুট্টা থেকে লাভ অনেক বেশি হয়।'
ভুট্টা চাষের মাধ্যমে রবিশস্য নিয়ে হাওরের কৃষকদের চিন্তার ভাঁজ অনেকটাই দূর করেছে। উঁকি দিচ্ছে সম্ভাবনার নতুন ভোর। তবে বাজারজাতকরণে কৃষকের স্বার্থরক্ষার তাগিদ সংশ্লিষ্টদের।
এগ্রি২৪.টিভির বিদেশ, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা সিভি ও নিউজ পাঠান agri24.tv@gmail.com এই ইমেইলে