ঢাকা   সোমবার
৩১ মার্চ ২০২৫
১৬ চৈত্র ১৪৩১, ০১ শাওয়াল ১৪৪৬

পানি সংকট বিপাকে বোরো চাষিরা, ধানে চিটা হওয়ার আশঙ্কা 

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:৪৫, ২৮ মার্চ ২০২৫

পানি সংকট বিপাকে বোরো চাষিরা, ধানে চিটা হওয়ার আশঙ্কা 

বোরো ক্ষেতে থোড়ধান। এ সময় সেচের প্রয়োজন বেশি। পরিমিত সেচ দিতে না পারলে ধানে বেশি চিটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু জলাশয়গুলো শুকিয়ে গেছে প্রায়। এই পরিস্থিতিতে সেচ সংকটে পড়েছেন বোরো চাষিরা।

পানি সংকটের কারণে বোরো ক্ষেতে সময়মতো সেচ দিতে পারছেন না বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চাষিরা। পলি পড়ে ভরাট হয়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে জলাশয়গুলো। এই এলাকা কৃষিনির্ভর হলেও জলাশয়গুলোতে পানি সংকটের কারণে অনেক সময় বৃষ্টির ও জোয়ারের ওপর নির্ভর করে সেচ কাজ চালাতে হচ্ছে এলাকার কৃষকের। জলাশয়গুলো ভরাটের কারণে বছরের প্রায় অর্ধেক সময় কর্মহীন কৃষক মাঠে অক্লান্ত শ্রম দিয়েও তাদের স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না, চৈত্র-বৈশাখ মাসে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাশয়গুলোর আশপাশের বোরো জমি পানিতে তলিয়ে যায়, সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ২০ একরের ঊর্ধ্বে ১২টি জলাশয় ভূমি অফিসের তালিকাভুক্ত। আর ২০ একরের মধ্যে জলাশয় রয়েছে ১৭টি। প্রশাসন থেকে এগুলো ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে খনন না করায় এসব জলাশয় পলিমাটি পড়ে ভরাট হতে চলেছে। এসব জলাশয় শুকিয়ে মৃতপ্রায় অবস্থা হয়েছে। জলাশয়গুলোর ওপর নির্ভরশীল চার হাজার হেক্টর জমি থাকলেও পানি সংকটের কারণে ঠিকমতো সেচ দিতে পারছেন না কৃষক।

বিশেষ করে বালিয়াদহ, গালাচিপা, চন্দনবিল, ডেপারবিল, জয়কালীপুর গ্রুপ ফিশারিজ, মানিকপুর গ্রুপ ফিশারিজ, সাতবিলা বিল এলাকায় সেচ সংকট তীব্র আকার ধারণ করে বোরো মৌসুমে। দীর্ঘদিন ধরে জলাশয় খনন না করার কারণে পানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে। ফলে কৃষক সেচের পানির জন্য গভীর নলকূপের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। বৃষ্টি ও জোয়ারের ওপর নির্ভর করে বোরো ক্ষেতে সেচকাজ চালাতে হচ্ছে অনেকের। জমিতে সময়মতো সেচ দিতে না পারায় কাঙ্ক্ষিত ফলন ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষক।

চাষিরা জানান, থোড়ধানে পরিমিত সেচ দরকার। এখন পানি সংকটে সেচ দিতে পারছেন না। এই সময় ঠিকমতো সেচ দিতে না পারলে ধান বেশি চিটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

ঝুনারচর গ্রামের কৃষক কবির হোসেন জানান, পানি সংকটের কারণে বিলের আশপাশের বোরো ক্ষেতে সেচকাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিলে পানি না থাকায় জমিতে ঠিকমতো সেচ দিতে পারছেন না। কিন্তু যখন ধান কাটার সময়, তখন বৃষ্টির পানি এসে সব তলিয়ে যায়।

হায়দরনগর গ্রামের ইমরান হোসেন বলেন, ‘আমাদের গ্রামের বিলে পানি না থাকায় ১ হাজার বিঘা জমিতে বোরো চাষ বন্ধ হয়ে গেছে। বিলটি খনন করলে এই এলাকার কয়েক হাজার একর জমিতে বোরো চাষ করা সম্ভব হবে।’

রুপসদী গ্রামের ব্লক ম্যানেজার সালে আহমেদ জানান, বৃষ্টির ও জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করতে হয় জমিতে সেচ দিতে। বিলে পানি থাকে না ঠিকভাবে। তাই ভরা মৌসুমে জমিতে পানি দিতে পারেন না তারা।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য– ফরদাবাদ, রুপসদী, ছলিমাবাদেরসহ বিভিন্ন বিলে শুকিয়ে গেছে প্রায়। পানি সংকটের কারণে সময়মতো জমিতে সেচ দিতে পারছেন না কৃষক। এতে আশানুরূপ ফলন পান না। জরুরি ভিত্তিতে জলাশয়গুলো খনন করা দরকার।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌসী আরা জানান, পলিমাটি পড়ে ভরাট হওয়া জলাশয়গুলো খননের জন্য তাদের কাছে কোনো প্রস্তাব চাওয়া হয়নি। খননের জন্য যখনই তালিকা চাওয়া হবে তখনই জলাশয়ের তালিকা পাঠানো হবে।

এগ্রি২৪.টিভির বিদেশ, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা সিভি  ও নিউজ পাঠান agri24.tv@gmail.com এই ইমেইলে।