ঢাকা   সোমবার
৩১ মার্চ ২০২৫
১৬ চৈত্র ১৪৩১, ০১ শাওয়াল ১৪৪৬

নেত্রকোনায় পাহাড়ের পাদদেশে পতিত জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:২১, ২৬ মার্চ ২০২৫

নেত্রকোনায় পাহাড়ের পাদদেশে পতিত জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে

নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দায় পাহাড়ের পাদদেশে পতিত জমিতে বালুসহনশীল বাদামসহ অন্যান্য ফসল চাষ করে  লাভবান হচ্ছেন কৃষক।

কলমাকান্দা উপজেলার চন্দ্রডিঙ্গা গ্রামের অনেক জমি পাহাড়ী ঢলের সাথে আসা বালিতে ঢেকে যায়, যা জমির উর্বরতা নষ্ট করে এবং চাষাবাদের অনুপযোগী করে তোলে। এ কারণে আগে কৃষকরা তাদের জমি ফেলে রাখতেন । স্থানীয় কৃষকরা জানান, এখন তারা পতিত জমিতে বালুসহনশীল ফসল আবাদ করছেন। 

কলমাকান্দা উপজেলার চন্দ্রডিঙ্গা গ্রামে এ বছর ১২ জন কৃষক মোট ২২৪ শতাংশ জমিতে বাদাম চাষ করেছেন, ভুূট্টা রোপণ করেছেন ৪ জন কৃষক মোট ৩২ শতাংশ জমিতে,  ৮৮ শতাংশ জমিতে মিষ্টি আলু চাষ করেছেন ৬ জন কৃষক। এ গ্রামের কৃষকরা জানান, বারসিকের গবেষণা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা বালি জমিতে ফসল চাষের কৌশল শিখেছেন।

স্থানীয় কৃষক পরিমল রেমা বলেন, “আগে আমাদের জমি পতিত থাকত, ফলে কোনো আয় হতো না। এখন আমরা বাদাম, ভুট্টা ও মিষ্টি আলু চাষ করে বাড়তি আয় করছি। আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে।’  তিনি আরও বলেন, ‘এবছর আমি আরো বেশি করে বাদাম ভুট্টা ও মিষ্টি আলু চাষ করেছি। এবছর পরীক্ষামূলক ৮ শতাংশ জমিতে প্রথমবারের মত আখ চাষ করেছি।’

সাবিনা রেমা বলেন, “আমার আবাদি জমি বালিতে ঢাকা পড়ে যাওয়ার পর থেকে সে জমিতে কোন ফসল চাষ করা সম্ভব হতো না। কিন্তু এখন বালি জমিতে বাদাম, ভুূট্টা ও মিষ্টি আলু চাষ করছি। ফলনও বেশ ভালই পাচ্ছি।”

সাদেক মিয়া বলেন, ‘‘পাহাড়ি ঢলে আমার অনেক জমি বালুতে ঢাকা পড়ে যায়, এক সময় সেসব জমি অনাবাদি রাখতে হতো কিন্তু এখন বালি সহনশীল ফসল চাষ করে লাভবান হচ্ছি।”

সুকুমার হাজং বলেন, “এ বছর আমি প্রথমবারের মত আমার অনাবাদি জমিতে বাদাম চাষ করেছি বাদাম গাছের ধরন খুবই ভালো। আশা করি ফলনও ভালোই পাবো”।

এ উদ্যোগের ফলে পতিত জমির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হয়েছে, যা কৃষকদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাচ্ছে। এছাড়া, স্থানীয় বাজারে ফসলের সরবরাহ বেড়েছে, যা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। নারী কৃষকরাও এ উদ্যোগে অংশ নিয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, "আমাদের নেত্রকোনা জেলায় ভুট্টা এবং বাদামের আবাদ কম হয়,আমাদের এখানে দুটি পাহাড়ি উপজেলা আছে একটি দুর্গাপুর, অন্যটি কলমাকান্দা,এখানে পাহাড়ের পাদদেশে অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় পানির সমস্যা হয়, তো সেসব জায়গায় যেখানে পানির সমস্যা হয় সেখানে আমরা ভুট্টা, বাদাম এবং বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি আবাদের ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকি,আমরা বিগত বছরগুলোতে ভুূট্টা এবং বাদামে চাষের ক্ষেত্রে কৃষককে কৃষি প্রণোদনা  দিয়ে সহযোগিতা করেছি। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদেরকে এক বিঘা জমিতে চাষাবাদের জন্য বিনামূল্যে বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছিল, এবছর আমাদের যে পুনর্বাসন প্রোগ্রামটি দেওয়া হয়েছে  সেখানে আসলে যেহেতু আমাদের ভুট্টা এবং বাদাম আবাদ খুবই কম হয়, আমাদের কোন প্রণোদনা প্রোগ্রামে এ দুইটি ফসলের আওতায় কোন সহযোগিতা ছিল না, সে হিসেবে এবছর আমরা কৃষকদের কিছু দিতে পারিনি তবে আমাদের এখানে কিছু প্রকল্প আছে এ সকল প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে ভুট্টা এবং বাদামসহ অন্যান্য যেসকল ফসলগুলো এলাকায় আবাদ করলে ভালো হবে এবং এলাকার উপযোগী সে ফসলগুলোর প্রদর্শনী আমরা দিয়ে থাকি এবং প্রদর্শনীর ক্ষেত্রে প্রকল্প থেকে কৃষকদের  প্রশিক্ষণসহ তাদেরকে বিভিন্ন উপকরণ জীবন বীজ, সার এবং বিভিন্ন ধরনের  বালাইনাশক প্রয়োজন হয় তাদেরকে আমরা এ প্রকল্প থেকে দিয়ে থাকি।"

এগ্রি২৪.টিভির বিদেশ, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা সিভি  ও নিউজ পাঠান agri24.tv@gmail.com এই ইমেইলে।