ঢাকা   সোমবার
১৭ মার্চ ২০২৫
২ চৈত্র ১৪৩১, ১৭ রমজান ১৪৪৬

বাজারে দাম নেই

হিমাগার মালিকদের বুকিং বন্ধ, আলু নিয়ে চরম বিপাকে চাষিরা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ১৭ মার্চ ২০২৫

হিমাগার মালিকদের বুকিং বন্ধ, আলু নিয়ে চরম বিপাকে চাষিরা

বাজারে দাম নেই। হিমাগার মালিকদের বুকিং বন্ধ তাই আলু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন রংপুর অঞ্চলের চাষিরা। এ অবস্থা চলতে থাকলে খেতের আলু খেতেই পড়ে থাকবে। না হলে গরু ছাগলকে খাওয়াতে হবে। চাষিদের কান্না দেখার যেন কেউ নেই।

রংপুর নগরীর চিলমন এলাকার আলু চাষি গৌরাঙ্গ রায় বলেন, চার দিন হয় আলু উত্তোলন করে জমিতে ফেলে রেখেছি। ক্রেতা নেই। দামও নেই। বিক্রিও নেই। বর্তমানে বাজারে পাইকারি আলু বিক্রি হচ্ছে ১০/১১ টাকা কেজি। খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৩/১৪ টাকা। এক দোন (২২ শতক) জমিতে আলুর বীজ লাগে ২৪ হাজার টাকার। রোপণ, সার, উত্তোলন ইত্যাদির খরচ পড়ে ১৯ হাজার টাকা। এক দোন জমিতে মোট খরচ হয় ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকা।  উৎপাদন হয় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ কেজি। সেই হিসাবে ১ কেজি আলু উৎপাদনে খরচ পড়ে ১৯ থেকে ২০ টাকা।  হিমাগারে আলু রাখলে কেজি প্রতি আরও যোগ হবে আট টাকা। সব মিলিয়ে দেখা গেছে এক কেজি আলু উৎপাদনে খরচ পড়ছে ২৮ টাকা। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী প্রতিকেজি আলুতে কৃষকদের লোকসান হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। শুধু গৌরাঙ্গ রায় নয় তার মতো হাজারও আলু চাষির এ অবস্থা।

জানা গেছে, গত কয়েক বছর থেকে বাজারে আলুর দাম ভালো পাওয়ায় রংপুর অঞ্চলের কৃষকরা এবার বেশি পরিমাণ জমিতে আলুর আবাদ করছেন। কৃষি অফিসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০ হাজারের বেশি হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় এবার আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৫৭৬ হেক্টর জমিতে। সেখানে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৩৯ হেক্টর। আলুর উৎপাদন গড়ে  হেক্টরপ্রতি ২০ টনের বেশি হয়ে থাকে। এ পরিমাণ জমি থেকে প্রায় ২৮ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় আলু কর্তন হয়েছে প্রায় ৯৩ হাজার জমিতে। অর্থাৎ ৮৫ শতাংশ আলু খেত থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। এ অবস্থায় হিমাগার মালিকরা বুকিং বন্ধ করে দেওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন আলু চাষিরা। রংপুর জেলায় ৩৯টি হিমাগার রয়েছে। এসব হিমাগারে আলুর ধারণ ক্ষমতা ৩ লাখ ৬১ হাজার ৪৩৮ মেট্রিক টন। এর সবটাই বুকিং হয়েছে এমনটা দাবি করছেন হিমাগার মালিকরা।

এদিকে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের আহ্বায়ক আহসানুল আরেফিন তিতু ও সাধারণ সম্পাদক অজিত দাস  কোল্ড স্টোরে আলুর বুকিং বন্ধের তীব্র নিন্দা জানিয়ে আলু চাষিদের জন্য কোল্ড স্টোর খুলতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

রংপুর জেলা হিমাগার মালিক সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেশি আলু উৎপাদন হওয়ায় একটু সমস্যা হচ্ছে।

সর্বশেষ