ঢাকা   রোববার
০৯ মার্চ ২০২৫
২৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৯ রমজান ১৪৪৬

রমজানের বাজার ধরতে পেরে দ্বিগুণ লাভে খুশি ফুলবাড়ির খিরা চাষিরা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৪:৪৩, ৮ মার্চ ২০২৫

রমজানের বাজার ধরতে পেরে দ্বিগুণ লাভে খুশি ফুলবাড়ির খিরা চাষিরা

রমজানের বাজার ধরতে পারায় খুশি জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার খিরা চাষিরা। অধিক ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তারা।

ফুলবাড়ী উপজেলার গোয়ালপাড়া গ্রামের কৃষক গনেশ  চন্দ্র (৪২)-এর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি চলতি রবি মৌসুমে তার নিজের ৪০ শতক জমিতে খিরা চাষ করেছেন। অনুকূল আবহাওয়া ও সুষ্ঠু পরিবেশ থাকায় তার জমিতে খিরার বাম্পার ফলন হয়েছে। রমজান শুরুর আগে যে খিরা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে  ১৬ থেকে ২০ টাকা। সেই খিরা রমজানের প্রথম দিন থেকে দাম বেড়ে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। এতে তার মতো খিরা চাষিরা দ্বিগুণ দাম পেয়ে সন্তুষ্ট। 

জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের মাঠ কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ বলেন, গত বছর রমজানে খিরার ভালো দাম পাওয়ায় এই বছর খিরা চাষির সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ায় এবারে রবি মৌসুমে খিরার ফলন ভালো হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসে বাজারে খিরার চাহিদা থাকায় এর দাম দ্বিগুণ হওয়ায় কৃষকেরাও লাভবান হয়েছেন। 

তিনি আরো জানান,  এবছর ফুলবাড়ী উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে ১৩৫ হেক্টর জমিতে খিরার চাষ হয়েছে। খিরার বাম্পার ফলন হওয়ায়, পবিত্র রমজান মাসে ফুলবাড়ী উপজেলার চাহিদা পূরণ করে, এখান থেকে খিরা জেলার বাইরে বগুড়া, টাঙ্গাইল ও রাজধানী ঢাকায় পাইকারেরা নিয়ে যাচ্ছে।
     
জানা যায়, সারা বছর খিরার চাহিদা কম থাকলেও রমজান মাসে খিরার চাহিদা অনেক বেশি থাকে। ফলে সব পণ্যের পাশাপাশি খিরার ও শশার দাম বৃদ্ধি পায়। সে কারণে রমজান মাসকে লক্ষ্য রেখে দিনাজপুরের খিরা চাষিরা তাদের তিন ফসলি জমিতে খিরা রোপন করেন। চলতি বছরও তার কোন ব্যত্যয় ঘটেনি। রমজান শুরুর একদিন আগে যে খিরা বাজারে বিক্রয় হয়েছে ১৬ থেকে ২০টাকা, রমজানের প্রথম দিন থেকে সেই খিরার দাম বেড়ে গিয়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  আগের চেয়ে দ্বিগুণ দামে কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত খিরা  বিক্রি করতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

একই উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, এবছর আমার নিজের  ৪২ শতক জমিতে খিরা আবাদ করেছি। এরই মধ্যে ৪৮ মন খিরা বাজারে বিক্রয় করেছি। রমজান আসার আগে প্রতি কেজি খিরা পাইকারি বিক্রয় করেছি ১৬ থেকে ২০ টাকা দরে । রমজানের প্রথম দিন থেকে সেই খিরা বিক্রয় করছি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে। তিনি এখন পর্যন্ত ৭০ হাজার টাকার খিরা বিক্রি করেছেন। তার জমি থেকে আরো শতাধিক মন খিরা এই রমজান মাসে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। খিরা চাষে জমিতে খরচ হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। খরচ বাদেও তার লক্ষাধিক টাকা লাভ বলে তিনি আশা করেন। 

দৌলতপুর গ্রামের আরেক খিরা চাষি নিমাই চন্দ্র, শিবনগর গ্রামের সজল মিয়া, আলাদিপুর গ্রামের মেহেরাজ আলীসহ বেশ কয়েকজন খিরা চাষির সাথে কথা বলে জানা যায়, রমজান মাসে ভালো দামে খিরা বিক্রি করে লাভবান হওয়ায় তারা সকলেই খুশি।

ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আকতার বলেন, এই উপজেলায় ৬০ থেকে ৭০ হেক্টর জমিতে খিরা ও শসা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। গত বছর কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত খিরার ভালো দাম পাওয়ায় এবারে ১৩৫ হেক্টর জমিতে খিরা চাষ হয়েছে। 

তিনি বলেন, কৃষকেরা লাভবান হওয়ায় দিন দিন খিরা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই জমিতে বছরে ৩ বার খিরা চাষ করতে পারে। তবে এবছর কৃষকরা পবিত্র  রমজান মাসকে সামনে রেখে খিরা চাষে প্রস্তুতি নিয়েছে বেশি। কৃষি অধিদপ্তর খিরা চাষিদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা ও পারমর্শ দিয়ে থাকে। ফলে চাষিদের ফসল ভালো হয়। এতে কৃষকরা অধিক লাভবান হয়।

এগ্রি২৪.টিভির বিদেশ, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা সিভি  ও নিউজ পাঠান agri24.tv@gmail.com এই ইমেইলে।