প্রাকৃতিক উপায়ে পুষ্টির জোগান বাড়াতে ঘাস গবাদিপশুর প্রধান খাদ্য। তাই গো-খাদ্যের খরচ বাঁচাতে অল্প খরচে সড়কের দু’পাশে পরিত্যক্ত জায়গায় নেপিয়ার জাতের ঘাস চাষ করছে খামারিরা।
দিনাজপুরের খানসামার ৬টি ইউপির অন্তত ২৭কিলোমিটার সড়কের পাশে ও পরিত্যক্ত জমিতে ঘাস চাষ করা হচ্ছে। এতে সড়কের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি লাভবান হচ্ছেন খামারি ও ঘাস চাষিরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরামর্শে পরিত্যক্ত ও নীচু জমির পাশাপাশি বিভিন্ন সড়কের দুইধারে উন্নতজাতের ঘাস চাষ করছেন খানসামার ১৭১জন খামারি।
মঙ্গলবার খানসামার পাকেরহাট-খানসামা সড়ক, কাচিনীয়া-খানসামা সড়কে দেখা যায়, রাস্তার দু’পাশে লাগানো হয়েছে নেপিয়ার জাতের ঘাস। পরিত্যক্ত জমিতে চাষ করা এসব ঘাস যত্ন ছাড়াই দ্রুত বেড়ে উঠছে। খাওয়ার উপযোগী হলে কাটার পর পুনরায় তা গজিয়ে ওঠে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, খানসামার অন্তত ২৭ কিলোমিটার রাস্তার পাশে ও পরিত্যক্ত জমিতে ১৬২জন ঘাসচাষি ও ৯ জন ঘাস বিক্রেতা এই ঘাস রক্ষণাবেক্ষণের কাজে সম্পৃক্ত। উপজেলায় বৃহৎ ও ক্ষুদ্র পরিসরে ঘাস খাওয়ার উপযোগী অন্তত ২ লাখ ১০ হাজার ৮১০টি গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ রয়েছে।
খানসামার সহজপুর গ্রামের খামারি অলিউর রহমান বলেন, 'প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরামর্শে পরিত্যক্ত জমি ও রাস্তার পাশে ঘাস লাগিয়েছি। নিজের গবাদিপশুর চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয়ভাবে বিক্রিও করি।'
বালাপাড়া গ্রামের লিটন ইসলাম বলেন, 'বাজারে গো-খাদ্যের দাম তুলনামূলক বেশি। গরু-ছাগল লালনপালন করতে হিমশিম খেতে হয়। তাই বাড়ির পাশে ঘাস চাষ করেছি। যেন নিজের গরু-ছাগলের খাদ্যের চাহিদা মেটানো যায়।'
স্থানীয় ঘাস বিক্রেতা আফজাল হোসেন বলেন, 'বর্তমান সময়ে গরু-ছাগলের খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় মানুষ ঘাসের উপর আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। প্রায় প্রতিদিনই বাজারে প্রতি আঁটি ঘাস ১০-২০ টাকা দরে বিক্রি করছি। এতে নিজেরও আয়ের সুযোগ হয়েছে।'
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রতন কুমার ঘোষ বলেন,'গো-খাদ্যের অর্থনৈতিক চাপ কমানো ও গবাদি পশুর পুষ্টি বৃদ্ধিতে সড়কে নেপিয়ার ও জারাসহ বিভিন্ন জাতের ঘাস লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছি। বর্তমান সময়ে গবাদিপশুর উৎপাদন খরচের অধিকাংশ খাদ্যের ব্যয় মিটাতে যায়। এতে খামারিদের লাভের পরিমাণ কমে যায়। তাই ঘাস চাষে তাঁদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।'