ঢাকা   শনিবার
৩০ নভেম্বর ২০২৪
১৬ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

যে কারণে দেশের বাজারে জিরার দাম অর্ধেকে নেমে এলো

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:৫৬, ৩ এপ্রিল ২০২৪

যে কারণে দেশের বাজারে জিরার দাম অর্ধেকে নেমে এলো

ভারতে এবার জিরার উৎপাদন অনুমানের চেয়েও বেশি হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের বাজারেও। ভারত থেকে আমদানি করা জিরার কারণে দেশের বাজারে এই মসলার মূল্য কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে।

ভারতের বিভিন্ন গনমাধ্যম দেশটির কৃষিসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন এবং অধিদফতরের বরাতে আগেই ধারণা দিয়েছিল যে, এবার জিরার উৎপাদন তুলনামূলকভাবে বেশি হচ্ছে। চলতি বছর জিরার উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টরা। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, ভারতে গুজরাটসহ অনেক প্রদেশের কৃষকরা অন্যান্য অনেক মসলার তুলনায় জিরা ও মৌরি চাষে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এই মৌসুমে। বিশেষ করে যে সব ক্ষেতে আগে ধনিয়া চাষ করা হতো, সেখানে এবার কৃষকরা জিরা চাষে করেছেন। যার ফলে অন্যান্য যে কোনো ফসলের তুলনায় জিরা উৎপাদন, বিক্রি ও রফতানি বেশি হবে বলে ধারণা করেন সংশ্লিষ্টরা।

দ্য ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্পাইস স্টেকহোল্ডারসের (এফআইএসএস) বরাতে দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার মার্চ মাসের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের তুলনায় প্রায় ৯৮ শতাংশ জিরা বেশি উৎপাদন হতে যাচ্ছে চলতি মৌসুমে। পাশাপাশি মৌরিও প্রায় ১১৯ শতাংশ বেশি উৎপাদন হবে বলে ধারণা করেছিল এই সংস্থা। এই ব্যাপক উৎপাদন ভারতসহ এর বাণিজ্যিক বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর জিরার বাজারে প্রভাব ফেলবে বলে আভাস দেয়া হয় প্রতিবেদনে।

চলতি মৌসুমে বিশ্বের অন্যতম মসলা রফতানিকারক দেশ ভারত থেকে জিরা আমদানি শুরু হতেই এর প্রভাব বাজারে লক্ষ্য করা যায়। মঙ্গলবার (২রা এপ্রিল) দুপুরে হিলির বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ২ মাস আগেও প্রতিকেজি যে জিরার দাম ছিল হাজার টাকার ওপরে, কয়েক দফায় দাম কমে সেই জিরাই বর্তমানে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। জিরার আমদানি যেভাবে হচ্ছে তাতে দাম আরও কমার কথা বলছেন মসলা ব্যবসায়ীরা। কম দামে কিনতে পেরে খুশি সাধারণ ক্রেতারাও।
  
চলতি রমজানে বাংলাদেশের নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিরতায় কাটলেও, ভারতীয় জিরার প্রভাবে এখন এই মসলার দাম একেবারে ভোক্তাদের হাতের নাগালে এসে পৌছেছে। বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ৩ মাসে পর্যায়ক্রমে জিরার দাম কমেছে কেজিপ্রতি ৫৫০ টাকা পর্যন্ত।
 
জিরা বিক্রেতা ইমরান বলেন, আগে জিরা ইরানসহ বহির্বিশ্ব থেকে আমদানি হলেও বর্তমানে আমদানি হচ্ছে ভারত থেকে। চলতি মৌসুমে ভারতে জিরার ফলন অনেক ভালো হয়েছে। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিও বেড়েছে। এর ফলে প্রতিনিয়ত কমছে দাম।
 
ভারত থেকে আমদানি করা কাকা জিরা ৬০০ টাকা, বাবা জিরা ৬২০ টাকা, মধু জিরা ৬২০ টাকা, অমরিত জিরা ৬০০ টাকা, সোনা জিরা ৬৩০ টাকা ও ডিবিগোল্ড জিরা ৬৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
 
হিলি স্থলববন্দরের আমদানিকারকের প্রতিনিধি জাবেদ হোসেন রাসেল বলেন, চাহিদা থাকায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে অনেকটাই বেড়েছে জিরার আমদানি। এসব জিরা আসছে ভারতের গুজরাট থেকে। প্রতি কেজি জিরার শুল্ক দিতে হয় ২৩৩ টাকা। যাচ্ছে বগুড়া, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরে।
 
হিলি কাস্টমসের তথ্যমতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভারত থেকে জিরা আমদানি হয়েছে ৪৪৮ ট্রাকে ৭ হাজার ৩৪৭ মেট্রিক টন।