মৌলভীবাজারে রয়েছে ৭৩টি খাসিয়া পানপুঞ্জি। এসব পুঞ্জি থেকে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার পান বিক্রি হয়। বছরে যা দাঁড়ায় প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকায়। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এ পান যাচ্ছে বিদেশেও।
খাসিয়া জনগোষ্ঠির আয়ের প্রধান উৎস পান চাষ। এটি তাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পথও বলা যায়। সমতলের সাধারণ বরজের চেয়ে টিলাতে পান চাষ বেশ আলাদা। এ জন্য প্রয়োজন হয় উঁচু গাছ ও পর্যাপ্ত রোদের। আর তাই চাষের গাছটির আশপাশের গাছের ডাল ফাঁকা রাখতে হয়।
সাধারণত পুরুষেরা জুমে পান উৎপাদনের কাজ করেন। আর নারীরা ঘরের কাজের পাশাপাশি পান গোছানো ও বিক্রির কাজ করেন।
চাষ পদ্ধতির মতো স্বাদেও আলাদা খাসিয়া পান। মূলত বাড়তি ঝাঁজই এর প্রধান আকর্ষণ। অন্য জায়গার চেয়ে সিলেট বিভাগে চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
জেলার সর্ববৃহৎ পানের আড়ৎ কুলাউড়ার রবিবাজারে প্রতি কুড়ি পান মানভেদে বিক্রি হয় ৪-৬ হাজার টাকায়।
জেলার ছয়টি উপজেলাতে রয়েছে খাসিয়াদের বসবাস। সেখানেও রয়েছে বহু পানের আড়ৎ। যা থেকে বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার পান বিক্রি হয় বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। এসব পান দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা মিটিয়ে যায় কয়েকটি দেশে।
রবির বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল হাই সেলু বলেন, 'প্রচুর মানুষ খাওয়ার জন্য পান নিয়ে যায়। প্রতিমাসে দেড় থেকে দুই কোটি টাকার পান বিভিন্ন জায়গায় যায়।'
ব্যবসায়ীরা মনে করেন, পানের রপ্তানি আরও বাড়লে আরও বেশি অর্থ আয়ের উৎস হতে পারতো খাতটি।
এদিকে জমিসহ পান চাষের বিভিন্ন সমস্যার কথা বলছেন খাসিয়া নেতারা। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ারও আহ্বান তাদের।
খাসিয়া সোশ্যাল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফিলা পতমি বলেন, 'দেশের অনেক জায়গাতে আমাদের পান চলে। বিদেশে প্রবাসীদের কাছেও এর অনেক চাহিদা আছে।'
সাধারণ খাওয়া কিংবা শুধু অতিথি আপ্যায়নই নয়, ছোটখাটো চিকিৎসাতেও স্থানীয়ভাবে ব্যবহৃত হয় খাসিয়া পান।