প্রচণ্ড তাপদাহে মারা যাচ্ছে ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগি। খামারিরা বলছেন প্রতিটি খামারেই প্রায় ৩০ শতাংশ মুরগির বাচ্চা মারা যাচ্ছে। তার ওপর অতিরিক্ত গরমের কারণে বাজারে কমে গেছে মুরগি ও ডিমের চাহিদা। তাই বাধ্য হয়ে লোকসানেই পোল্ট্রি পণ্য বিক্রিতে বাধ্য হচ্ছেন খামারিরা।
এই অবস্থায় ব্যবসায় টিকে থাকতে মুরগির খাবারের দাম কমানো ও বিদ্যুতের দাবী করছেন তারা।
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপে হাঁসফাঁস করছে দেশের পুরো প্রাণিকূল। একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় লালন পালন করতে হয় যাদের, সেই ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির অবস্থা এখন আরও করুন! মাথার উপর ঘুরছে ফ্যান। বারে বারে গায়ে দেয়া হচ্ছে পানি। তারপরেও অতিকষ্টে নিশ্বাস-প্রশ্বাস ত্যাগ ও গ্রহণ করতে হচ্ছে এদের।
তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে টিনের চালেও এভাবে পানি দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে গাজীপুরের অধিকাংশ খামারে। এখন প্রায়ই বিদ্যুৎ থাকছে না বিধায়, জেনারেটরের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে কোন কোন খামারে।
পোল্ট্রি খামারি আব্দুল মজিদ জানালেন, এতো কিছু করেও সুস্থ রাখা যাচ্ছে না ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগিকে। গড়ে হাজারে ৩০০ অর্থাৎ প্রতি একশ’তে ৩০টা মুরগিই মারা যাচ্ছে অতি গরমে!
বাবুল হোসেন নামে এক খামারি বললেন, ৩০-৩৫ টাকার বাচ্চা সর্বশেষ কিনেছেন ৭০ টাকায়। এরপর গড়ে ৪০ দিনে প্রতিটি ব্রয়লার বড় করতে খাবারে তাদের খরচ হয়েছে ২৪১ টাকা। এর সাথে যোগ হয়েছে ভ্যাকসিন, ঔষধ ও তুষ খরচ। লেবারে যোগ হবে আরও ৪০ টাকা। অর্থাৎ ৩৯০ টাকা খরচ হয় যে ব্রয়লারের পেছনে সেটি এখন বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৩৬০ টাকায়!
আজিরন পোল্ট্রি ফার্মের স্বত্বাধিকারী তোফাজ্জল হোসেন জানালেন, এখন ক্ষতি হচ্ছে লেয়ার মুরগির খামারিদেরও। গরমের কারণে একদিকে ডিমের উৎপাদন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমে গেছে। অন্যদিকে ১১ টাকার উপরে প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ হলেও, তাদের তা বিক্রি করতে হচ্ছে সাড়ে ৮ টাকায়।
ভোক্তাকে কম দামে ডিম-মাংস খাওয়াতে চায় পোল্ট্রি খামারীরা। সেজন্য ফিডের দাম কমানোর দাবি করলেন ৫০ হাজার মুরগির খামারি তোফাজ্জল হোসেন।
গাজীপুর জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নারগিস খানম বলেছেন, খামারিদের এখন পর্যন্ত কি রকম ক্ষতি হয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে গরমে খামার রক্ষার জন্য মাইকিং করাসহ নানা ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন তারা।